নিজস্ব প্রতিনিধি: পাখির চোখে পঞ্চায়েত নির্বাচন(Panchayat Election)। লক্ষ্য দলের হারানো জমির পুনরুদ্ধার। তাই তার আগেই উত্তরবঙ্গে দলের ৩টি সাংগঠনিক জেলায় দলের সংগঠনে বড়সড় রদবদল করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। আর এই ৩ জেলা হল দার্জিলিং(সমতল)(Darjeeling Plain), আলিপুরদুয়ার(Alipurduyar) ও জলপাইগুড়ি(Jalpaiguri)। এই ৩ জেলাতেই উনিশের ভোটে বিজেপি জয়ের মুখ দেখেছে। একুশের ভোটেও তাঁরা এই ৩ জেলার বেশির ভাগ বিধানসভা কেন্দ্র ধরে রেখেছে। কিন্তু চব্বিশে যাতে বিজেপি আর না জেতে সেই লক্ষ্যেই এবার নিজেদের সংগঠনে বদল ঘটিয়ে ফেলল তৃণমূল। কেননা উত্তরবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে একুশের নির্বাচন ও তার পরে হয়ে যাওয়া নির্বাচনে হারানো মাটি ফিরে পাওয়ার ইঙ্গিত পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল।
শনিবার তৃণমূলের তরফে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরা হয়েছে এই রদবদলের ছবি। এদিন দার্জিলিং(সমতল), আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলার মোট ১৬টি ব্লকের দলীয় সভাপতির পদে রদবদল করা ছাড়াও তৃণমূলের মাদার, যুব, মহিলা এবং শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি পদে বদল ঘটানো হয়েছে। আর এই রদবদলের ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে স্বচ্ছ ভাবমূর্তিতে। তবে এদিন দার্জিলিংয়ের পার্বত্য অঞ্চলের দলীয় সংগঠনে কোনও বদল করা হয়নি। এই রদবদলের আগে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকে বসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন, ব্লক সভাপতি পদ নিয়ে কোনও গোষ্ঠীকোন্দল চলবে না। জেলাস্তরের নেতাদের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে ব্লক সভাপতিদের নাম প্রস্তাবের নির্দেশও দিয়েছিলেন অভিষেক। নামের খসড়া তৈরি করে জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও হয়। অবশেষে শনিবার সেই নামের তালিকা প্রকাশিত হল।
এই নতুন সভাপতিদের কাছে এখন অগ্নিপরীক্ষা হতে চলেছে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন। কেননা এই ১৬টি ব্লকে বিজেপি একুশের বিধানসভা নির্বাচনেও ভাল ফল করেছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে গেরুয়া শিবিরকে ধাক্কা দিয়ে তৃণমূলকে এগিয়ে দেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। আগামী বছর এপ্রিল-মে মাসে এ রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার সেই নির্বাচন এগিয়ে আনার কথা বলেছেন। রাজ্যের নির্বাচন কমিশনও জেলায় জেলায় বার্তা পাঠিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দেওয়ার বার্তা দিয়েছে জেলা প্রশাসনগুলিকে। সেই হিসাবে অনেকেই মনে করছেন চলতি বছরে উৎসব মরশুম শেষ হলেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামামা বেজে উঠবে। সেই হিসাবে সময় যে খুব বেশি রয়েছে হাতের মধ্যে তাও নয়। খুব জোর মাস ৮ মাস। এই সময়ের মধ্যেই তৃণমূলের এই ৩ সাংগঠনিক জেলার ব্লক সভাপতিদের ঘর গুছিয়ে নিতে হবে, দলকে শক্ত মাটির ওপর দাঁড়াতে হবে। কার্যত বড়সড় অগ্নিপরীক্ষার সামনে তাঁরা।