নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য রাজনীতিতে বিশেষ করে মালদা(Malda) জেলার রাজমনীতিতে রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেনের(Tajmul Hossain) গড় হিসাবে চিহ্নিত মালদা জেলার চাঁচল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকটি। অথচ সেই ব্লকেরই কিনা দু-দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) হাতছাড়া হয়েছে। অস্বস্তির আরও বড় কারণ এখানেই যে, খাস মন্ত্রীর বাড়ি যে গ্রাম পঞ্চায়েতে সেটিও ধরে রাখতে পারেনি শাসক দল। এই দুই গ্রাম পঞ্চায়েত হল মহেন্দ্রপুর ও হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। এর মধ্যে মন্ত্রীর বাড়ি মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। এই দুই গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বোর্ড গঠন করছে বাম-কংগ্রেস জোট। মন্ত্রী তাজমুল সাহেবের বাড়ি যে পঞ্চায়েতে সেই মহেন্দ্রপুরে বিদায়ী প্রধান ছিলেন মন্ত্রীর ভাইয়ের স্ত্রী জয়নব নিশা। ওথচ পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই পঞ্চায়েতেই ধরাশায়ী হয়েছে তৃণমূল। সেই সঙ্গে মন্ত্রীর পাশের হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতও তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে জোট। এখানে বাম কংগ্রেস ও বিজেপি মিলিত ভাবে বোর্ড গঠন করেছে। এর ফলে গোটা ব্লকে ৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬টির দখল নিয়েছে বিরোধীরা। একটিতে কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধদের নিয়ে বোর্ড গড়েছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন ঐক্যশ্রী প্রকল্পে শিক্ষার্থীদের আর নাম রিনিউয়াল করতে হবে না
উল্লেখ্য, গত ১২ আগস্ট এই দুই পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের নির্ধারিত সূচি ছিল। কিন্তু ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা জনিত কারণে বোর্ড গঠন পিছিয়ে দেওয়া হয়। শনিবার টানটান উত্তেজনার মধ্যে বোর্ড গঠন শুরু হয়। তবে নির্বিঘ্নেই বোর্ড গঠন সম্পন্ন হয়েছে বলে ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে। মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ২০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৯টি, সিপিএম ও কংগ্রেস ৫টি করে এবং নির্দল ১টি আসনে জয়ী হয়। ত্রিশঙ্কু এই পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করেছে বাম কংগ্রেস ও নির্দল মিলে। প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন সিপিএমের মৌসুমী দাস ও উপপ্রধান নির্দলের জুল মহম্মদ। মন্ত্রীর ভ্রাতৃবধূ জয়নব নিশা এই পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান থাকা সত্ত্বেও তৃণমূল পরাজিত হওয়ায় এলাকায় এনিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগে Grade-3 পদে কর্মী নিয়োগ
পাশের হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেও তৃণমূলকে হারিয়ে দখল নিয়েছে জোট। এই পঞ্চায়েতের মোট ৩০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ১২টি, বিজেপি ৬টি, সিপিএম ৪টি, কংগ্রেস ৭টি এবং নির্দল একটি আসনে জয়লাভ করে। প্রধান নির্বাচিত হন কংগ্রেসের আজিজা সুলতানা ও উপপ্রধান হন বিজেপির অজয় পাসমান। এখানে বাম কংগ্রেস ও বিজেপি মিলিজুলি বোর্ড গঠন করেছে। এই দুই গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হওয়া প্রসঙ্গে রাজ্যের ক্ষুদ্র, মাঝারি উদ্যোগ ও বস্ত্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন জানিয়েছেন, ‘এই ফলাফল নিয়ে দলীয় স্তরে পর্যালোচনা করা হবে। হরিশ্চন্দ্রপুরে বাম, কংগ্রেস ও বিজেপির সুবিধাবাদী রামধনু জোট হয়েছে। বাম-কংগ্রেস দিল্লিতে বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে জোটবদ্ধ লড়াইয়ের কথা বলে অথচ নিচুতলায় তারা মিলিজুলি বোর্ড গঠন করেছে। এই দ্বিচারিতার জবাব মানুষ লোকসভা নির্বাচনে দেবে।’