কৌশিক দে সরকার: একুশের ভোটে বাংলা(Bengal) দখলে এসেছিল বিজেপি(BJP)। তাঁদের শ্লোগান ছিল ‘আবকে বার ২০০ পার’। কিন্তু সেই শ্লোগানের বাস্তবায়নের ধারে কাছে পৌঁছাতে পারেনি তাঁরা। দৌড় থেমেছিল ৭৭টি আসন পেয়েই। সেই ভোটযুদ্ধে তৃণমূলের(TMC) বিরুদ্ধে মাঠে ছিল বাম-কংগ্রেস(Left-INC) ও ISF জোটও। কিন্তু দেখা যায় বাংলার এক্মাত্র বিরোধী দল হিসাবে উঠে আসে বিজেপিই। বাম ও কংগ্রেস শূন্য হয়েছিল বাংলার বিধানসভা। স্বাধীনতার পরে প্রথমবার। তবে তাঁদের জোটসঙ্গী ISF জিতেছিল ভাঙড়ে। জিতেছিলেন নওশাদ সিদ্দিকি(Nowsad Siddique)। এখনও পর্যন্ত তিনি ওই দলের একমাত্র বিধায়ক। কিন্তু তবুও তিনিই ভাবাচ্ছেন তৃণমূলকে। কেননা আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে নওশাদের দল কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বীরভূম, হাওড়া, হুগলি ও দুই ২৪ পরগনা জেলায় প্রার্থী দিতে চলেছে পঞ্চায়েতের ৩টি স্তরেই। অর্থাৎ জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতে।
আরও পড়ুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ জরুরি, অভিমত হাইকোর্টের
ISF’র এই প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত এখন ভাবাচ্ছে তৃণমূলকে। কেননা এই দলের সমর্থক ও ভোটাররা সকলেই সংখ্যালঘু সমাজের। আবার এই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কই তৃণমূলের সব থেকে বড় ভোট ভাণ্ডার। একুশের ভোটে এই ভোটব্যাঙ্কই ভাঙড় ব্যাতীত সর্বত্রই তৃণমূলের ঝুলিতে এসেছিল। কার্যত বিজেপির বঙ্গ দখল ঠেকাতে উত্তর দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বীরভূম, হাওড়া, হুগলি ও দুই ২৪ পরগনা জেলার সংখ্যালঘুরা দুই হাত উপুড় করে ভোট দিয়েছিল তৃণমূলকে। কিন্তু এই জেলাগুলিতেই গত ২ বছরে কিছুটা হলেও ছবি বদলেছে। সংখ্যালঘু সমাজের অন্দরে ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছেন নওশাদ। পায়ের নীচে মাটি পাচ্ছে ISF-ও। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই দলের প্রার্থীরা ঠিক কত ভোট কাটতে পারে সেই হিসাব কষা ভেতর ভেতর শুরু দিয়েছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের Group-D কর্মীদের ১৬ ঘন্টা ডিউটি
তবে ISF’র এই বাড়বৃদ্ধিতে নাখুশ বামেরা। কেননা তাঁরা চেয়েছিল ISF বাম শরিক দল হয়ে থেকে যাক। কিন্তু সে গুড়ে বালি পড়েছে। বামেদের ঘাড়ে চড়ে নওশাদ ভোট বৈতরণী পার হয়ে গেলেও এখন আর বামেদের সেভাবে পাত্তা দিচ্ছেন না। তিনি নিজের মতোই দলের কর্মসূচী ও বিস্তার চালিয়ে যাচ্ছেন। পঞ্চয়েত নির্বাচনে তাই বামেদের সঙ্গে ISF’র জোট আদৌ ঠিকঠাক ভাবে হয় কিনা তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বিধানসভায় জোট যতটা মসৃণ হয়েছে ততটা মসৃণ সম্ভবত পঞ্চায়েত নির্বাচনে হচ্ছে না। অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেসের তরফেও মোটামুটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছে, পঞ্চায়েতে বামেরা ISF-কে জমি ছাড়লেও তাঁরা ওই দলের সঙ্গে কোনও জোটে যাবেন না।