নিজস্ব প্রতিনিধি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) যখন প্রথমবার রেলমন্ত্রী হয়েছিলেন তখনই তিনি হুগলি জেলার তারকেশ্বর(Tarakeshwar) থেকে বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর(Bishnupur) পর্যন্ত নতুন রেল লাইন প্রকল্পের(New Rail Project) কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই প্রকল্পের কাজ অনেক দেরীতে শুরু হলেও এখন অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। একদিকে তারকেশ্বর থেকে আরামবাগ হয়ে গোঘাট অবধি ট্রেন যেমন নিত্যদিন চলাচল করছে তেমনি বিষ্ণুপুর থেকে ময়নাপুর পর্যন্ত অংশেও ট্রেন চলছে। কিন্তু ময়নাপুর থেকে গোঘাট পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ আটকে আছে মূলত ভবাদিঘী এলাকায় এই প্রকল্পের কাজ একইঞ্চিও না এগোনোয়। তবে এবারে সেই কাজ এগোবে কিনা তা নিয়ে একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে জনমানসে। কেননা ভবাদিঘী(Bhobadighi) যে গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ে সেই গোঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতে(Goghat GP) জয়ের মুখ দেখেছে তৃণমূল(TMC)। সেখানকার ২২টি আসনের মধ্যে ১৬টি আসনেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বিজেপি(BJP) পেয়েছে ৫টি আসন ও নির্দল পেয়েছে ১টি আসন।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পের টাকা যেহেতু বাজেটে দিয়ে দেওয়া হয়েছে তাই ভবাদিঘী অংশটুকু বাদ দিয়ে বাকি এলাকায় কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যেমন ময়নাপুর থেকে জয়রামবাটি পর্যন্ত রেললাইন পাতার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জয়রামবাটি থেকে কামারপুকুর অংশে রেললাইন পাতার কাজ বাকি আছে। যদিও সেখানেও জমি অধিগ্রহণের কাজ হয়ে গিয়েছে। আবার কামারপুরকুর থেকে ভবাদিঘী পর্যন্ত রেললাইন পাতা হয়ে গিয়েছে, কিন্তু ভবাদিঘী থেকে গোঘাট অবধি অংশে জমি অধিগ্রহণও করা যায়নি ভবাদিঘীকে ঘিরে আন্দোলন থাকার জন্য। কার্যত গোঘাট থেকে ভবাদিঘী এবং জয়রামবাটি থেকে কামারপুকুর এই দুটি অংশে কাজ শেষ হলেই তারকেশ্বর ও বিষ্ণুপুর এক লাইনে জুড়ে যাবে। শুধু তাই নয়, এই লাইন ব্যবহার করে খুব কম সময়ে হাওড়ার দিক থেকে তারকেশ্বর হয়ে বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া, আদ্রা ও পুরুলিয়া চলে যাওয়া যাবে। একই সঙ্গে হাওড়া থেকে আসানসোল যাওয়ার তৃতীয় পথও খুলে যাবে।
ভবাদিঘী এলাকার পঞ্চায়েতের ফল কী হয় তা জানার জন্য অনেকেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। এখন দেখা যাচ্ছে হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমার গোঘাট-১ ব্লকের গোঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল বেশ বড় ব্যবধানে জয়ী হয়েছে। তবে মূল ভবাদিঘী এলাকায় থাকা পঞ্চায়েত আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। তবে এলাকার সিংহভাগ বাসিন্দা এবারে ভোট দিয়েছে দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণ চেয়েই। তাই তৃণমূলের জয় ভবাদিঘীর বাসিন্দাদের ওপর বাড়তি যে একটা চাপ তৈরি করে দিল তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, এলাকার বাসিন্দাদের বিনা অনুমতিতে ওখানে জোর করে কিছু করা হবে না।