নিজস্ব প্রতিনিধি: আবারও মুখ পুড়ল কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের। তাঁর ঘরের শহর দিনহাটা। সেখানেই কিনা পুরসভা নির্বাচনে ৭টি ওয়ার্ডে প্রার্থীই দিতে পারল না বিজেপি। প্রার্থী দিতে পারেনি বাম ও কংগ্রেসও। নেই কোনও নির্দল প্রার্থীও। তাই ওই ৭টি ওয়ার্ডেই এদিন বিনাযুদ্ধে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। খাস কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ঘরের শহরে বিজেপির এহেন দুর্দশা ও তৃণমূলের এহেন দাপটে কার্যত বাংলার রাজনীতিতে তো বটেই, দেশের রাজনীতিতেও মুখ পু্ড়ল নিশীথের। একই সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের কাছেও নিশীথের কদর আরও কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ঘটনার জেরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিজেপির নীচুতলার কর্মিদের মধ্যেও। তাঁদের প্রশ্ন, কেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দলের এহেন দুর্দশা ঠেকাতে পারলেন না!
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের ১০৮টি পুরসভায় রয়েছে নির্বাচন। সেদিনই সেখানে ভোটগ্রহণ করা হবে। বুধবার ছিল ওই সব পুরসভায় মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন। আর তখনই দেখা গেল কোচবিহার জেলার অন্যতম মহকুমা শহর দিনহাটায় ৭টি ওয়ার্ডে তৃণমূল ভিন্ন আর কেউ প্রার্থী দেয়নি। তাই ওই ৭টি ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থীদেরই জয়ী বলে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। ১৬টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট দিনহাটা পুরসভায় বোর্ড গঠনের জন্য ৯জন কাউন্সিলরের সমর্থমের প্রয়োজন। এদিন ৭জন তৃণমূল প্রার্থী বিনা যুদ্ধে জয়ী হওয়ায় আর মাত্র ২টি ওয়ার্ডে তৃণমূল জিতলেই দিনহাটার পুরবোর্ড তৃণমূলের দখলে চলে যাবে। দিনহাটা পুরসভায় ওই ৭টি ওয়ার্ডে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি কোনও ভোটগ্রহণ করা হবে না। তবে শহরের বাকি ৯টি ওয়ার্ডে ওইদিন ভোটগ্রহণ করা হবে। এদিনের ঘটনার জেরে আবির খেলায় মাতেন তৃণমূলের নেতা থেকে কর্মী ও সমর্থকেরা। এদিন তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, দিনহাটার সব ওয়ার্ডেই জিতবে তৃণমূল। শহরে বিরোধীহীন পুরবোর্ড গড়বেন তাঁরা।
তবে এদিনের ঘটনার জেরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে গেরুয়া শিবিরে। মূল ক্ষোভ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে। দিনহাটা শহরেই নিশীথের বাড়ি। সেই শহরেই কিনা ৭টি ওয়ার্ডে প্রার্থীই দিতে পারল না বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের নীচুতলার কর্মীদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে নিশীথ দিনহাটা আসাই ছেড়ে দিয়েছেন। এলেও দলের নেতাকর্মী থেকে সমর্থক কাউকেই সময় দেন না। দলের কোনও কর্মসূচীতে তাঁকে পাওয়া যায় না। পুরনির্বাচনে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনি একদিনের জন্যও আসেননি। দল তাঁকে ভোটে জিতিয়ে সাংসদ করেছে, কেন্দ্রে মন্ত্রীও করেছে। কিন্তু দলকে প্রতিদানে তিনি উপেক্ষা ছাড়া আর কিছুই দিচ্ছেন না। আবার এদিন বিজেপির একাংশ অভিযোগ তুলেছেন, নিশীথ তৃণমূলে যাতে ভবিষ্যতে যোগ দেওয়া যায় তার জন্য এখন থেকেই তৃণমূলের হাতে পুরসভা তুলে দেওয়ার বন্দোবস্ত করে দিলেন।