নিজস্ব প্রতিনিধি: গত বছর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের(Governor) মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। তারই মাঝে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস(C V Anand Bose) রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করেন। বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্যের শিক্ষা দফতর। সেখানে সুপ্রিম কোর্ট(Supreme Court) নির্দেশ দেয়, অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যরা কোনও প্রকার স্থায়ী বা অস্থায়ী কোনও নিয়োগ করতে পারবেন না। এমনকী, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনওরকম সুযোগ সুবিধাও ভোগ করতে পারবেন না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের সেই নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ উঠেছে বীরভূমের বুকে বোলপুরের অদূরেই গড়ে ওঠা বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়(Biswa Bangla University) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কেননা সেখানে রাজ্যপাল নিযুক্ত অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য(Interim Vice-Chancellor) দিলীপকুমার মাইতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে একটি নিয়োগকে ঘিরে। অভিযোগ সেখানে, সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে এক অতিথি অধ্যাপককে নিয়োগ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে একজন অতিথি অধ্যাপককে নিযুক্ত করা হয়। এই মর্মে কর্তৃপক্ষের সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন বা বিজ্ঞপ্তি জারি করার কথা ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ছাড়া অন্য কোথাও সেই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়টি রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। তাই যে কোনও নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে সেই নিয়মকেও বুড়ো আঙ্গুল দেখানো হয়েছে বলে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ওই অতিথি অধ্যাপককে উপাচার্যের বাসভবনে থাকার অনুমতি দিয়েছেন বলেও দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে এই নিয়োগের বিষয়ে অন্ধকারে রয়েছে খোদ রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর। যদিও ওই অতিথি অধ্যাপককে অস্থায়ীভাবে প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছে বলে দায় এড়িয়েছেন বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য দিলীপকুমার মাইতি।
দিলীপবাবু এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কাউকেই স্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হয়নি। গণিত বিভাগের অতিথি অধ্যাপককে প্যানেলে আলোচনার মাধ্যমে ‘ক্যাজুয়াল স্টাফ’ হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। এর জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছিল। ক্লাস পিছু ৫০০ টাকার চুক্তিতে ওই অধ্যাপককে নিয়োগ করা হয়েছে। এর জন্য উচ্চশিক্ষা দফতরের কাছ থেকে অনুমতিও নেওয়া হয়েছে। যদিও নিয়োগের সেই বিজ্ঞপ্তি বা বিজ্ঞাপন দেখতে চাওয়া হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। আর এখানেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই কর্মী তথা আধিকারিকদের একাংশ দাবি করছেন, গোটা বিষয়টি চূড়ান্ত অস্বচ্ছ ভাবে করা হয়েছে এবং অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য কাউকে কিছু না জানিয়েই এই নিয়োগ করেছেন নিজের পছন্দ মতন। সম্ভবত নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তি ওনার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, আর সেই কারণেই তাঁকে তিনি নিজের বাসভবনেই থাকতে দিয়েছেন।