নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যজুড়ে কোভিড ঠেকাতে লাগু হয়ে গিয়েছে কড়া বিধিনিষেধ। আর সেই বিধির গেরোতেই আটকে গিয়েছে রাজ্যের পর্যট ন শিল্প। কেননা এদিন থেকেই তালা পড়ছে রাজ্যের সব পর্যটক কেন্দ্রে। আর তার থেকে বাদ পড়ছে না রাজ্যের সৈকতনগরী দিঘাও। বর্ষবরণের ছুটি তে যারা দিঘায় গিয়েছিলেন তাঁরাই এখন দলে দলে এই সৈকতনগরী ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন। সোম সকাল থেকেই দিঘার রেল স্টেশন আর বাসস্ট্যান্ডে ভিড় আছড়ে পড়ছে পর্যটকদের। সকলেই চাইছেন দ্রুত বাড়ি ফেরার বাস বা ট্রেন ধরতে। একই সঙ্গে যারা আগামি দিনে দিঘায় আসবেন বলে হোটেলে রুম বুক করেছিলেন তাঁরাও তাঁদের বুকিং বাতিল করছেন। আর তার জেরেই কার্যত মাথায় হাত পড়েছে দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীদের।
রবি দুপুরেই রাজ্য সরকারের তরফে কোডি বিধিনিষেধ রাজ্যজুড়ে লাগু করার কথা ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। আর তারপর বিকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে পর্যটকদের দিঘা ছাড়ার হিড়িক। রবি সন্ধ্যাতেই দিঘার বাসস্ট্যান্ডে পর্যটকদের ভিড় আছড়ে পড়েছিল। কিন্তু যে তুলনায় ভিড় জমেছিল সেই তুলনায় বাস না থাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে মাঠে নামতে হয়। রাতের মধ্যেই প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের ফেরার জন্য বেশ কিছু বাসের বন্দোবস্ত করা হয়। কিন্তু এদিন সকাল থেকে সেই একই ভিড় আছড়ে পড়েছে দিঘার বাসস্ট্যান্ড ও স্টেশনে। আর পর্যটকদের এই দলে দলে দিঘা ছাড়ার এই প্রবণতার মূলে রয়েছে প্রশাসনের তরফে জারি করা সমুদ্রস্নান ও সৈকতে ঘুরে বেড়ানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা। এই বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দুকুমার মাজি জানিয়েছেন, ‘হোটেলে থাকায় কোনও বিধিনিষেধ না থাকলেও সমুদ্র পাড়ে যাওয়া বা স্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সেই সঙ্গে ধাপে ধাপে পর্যটকদের বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা চলছে। অতিরিক্ত ভিড়ে গা না ভাসিয়ে সাধারণ মানুষদেরও কিছুটা সচেতন হওয়া দরকার।’
দিঘার পাশাপাশি মন্দারমণি, তাজপুর-সহ সৈকতনগরী ছেড়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে পর্যটকদের মধ্যে। যারা নিজস্ব গাড়ি এনেছেন, তাঁদের কিছুটা স্বস্তি থাকলেও চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন ট্রেন বা বাসে করে আসা যাত্রীরা। কারন পর্যাপ্ত বাস বা ট্রেন নেই। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়েই দেখা যাচ্ছে বেসরকারি বাস ও গাড়ির বুকিংয়ের ক্ষেত্রে চড়া দর হাঁকা হচ্ছে। কার্যত দ্বিগুণ বা ক্ষেত্র বিশেষে তিনগুণ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে পর্যটকদের এই দিঘা ছাড়ার ঘটনায় রীতিমত মাথায় হাত পড়েছে হোটেল মালিকদের। তাঁদের বক্তব্য, গত দুইবছর ধরে কোভিডের প্রকোপে তাঁদের ব্যবসার চূড়ান্ত ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু এ বার জানুয়ারিতে টানা হোটেল বুকিং ছিল। কিন্তু রবিবার বিকেলের পর থেকে আচমকা হু হু করে বুকিং বাতিল হতে শুরু করেছে। সমস্ত হোটেল খালি করে পর্যটকরা বাড়ি ফিরছেন। এর পর সরকার যদি হোটেল ব্যবসায়ীদের জন্য প্যাকেজ ঘোষণা না করে, তবে হোটেল ব্যাবসা মুখ থুবড়ে পড়বে।