নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য সরকারকে বিঁধে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumdar)। সেই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্যই ছিল রাজ্যের জেলায় জেলায় ধর্ষণের ঘটনায় রাজ্য সরকারের সমালোচনা। কিন্তু সেই বৈঠকই এখন গলার কাঁটা হয়ে গেল বঙ্গ বিজেপির(BJP) কাছে। তাঁরা এখন এই বৈঠককে না অস্বীকার করতে পারছে না এই বৈঠক ঘিরে ওঠা অভিযোগকে সরিয়ে দিতে পারছে। কার্যত নিজেদের বৈঠকের আগুনে নিজেদেরই এখন মুখ পুড়ছে। সৌজন্যে একটি টুইট, যা করছেন একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দূর্গাপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দীপ্তাংশু চৌধুরী(Diptangshu Chowdhury)। তিনি তাঁর টুইটে সাফ জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ নিয়ে প্রেস মিট করার আগে বঙ্গি বিজেপির সভাপতি যেন তাঁর নিজের পাশ থেকে ধর্ষণে অভিযুক্তের কাকাকে সরিয়ে দেন। আর এই টুইটই এখন তীব্র অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে বঙ্গ বিজেপির কাছে।
মঙ্গলবার সুকান্ত যখন সাংবাদিক বৈঠক করেন তখন তাঁর পাশে বসেছিলেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘড়ুই(Lakshman Ghorui)। এই লক্ষ্মণের ভাইপো সহদেব ঘড়ুই একটি ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত। যদিও এখনও সেই অভিযুক্ত ধরা পড়েনি পুলিশের কাছে, হয়নি তার কোনও শাস্তিও। অভিযোগ বিধায়কের ভাইপো হওয়ার জেরেই পালিয়ে পালিয়ে বেড়াতে পারছে সহদেব। সেই ঘটনা টেনে এনেই দীপ্তাংশু সুকান্তকে ট্যাগ করে টুইট করে লেখেন, ‘যাকে পাশে বসিয়ে আজ বিভিন্ন ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে আপনি প্রেস করছেন, এই দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুইয়ের ভাইপো ধর্ষণে অভিযুক্ত। অভিযুক্ত আজও অধরা। প্রথমে নিজের দলের বিধায়ক কাকা, যিনি ধর্ষণ অভিযুক্ত ভাইপোকে আড়াল করছে, তাদের সামলান, তারপর প্রেস করবেন।’ দীপ্তাংশুর এই টুইটই এখন মুখ পোড়াচ্ছে বিজেপির। তাঁর টুইটের জেরে রীতিমত অস্বস্তিতে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। কেননা দীপ্তাংশু মনে করেন, সহদেব ধরা না পড়ার পিছনে ভূমিকা রয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও কেন্দ্র সরকারের।
ঘটনাচক্রে এই টুইট বিতর্কের মধ্যেই এদিন দুর্গাপুর শহর ছেয়ে গিয়েছে ওই ঘটনা সংক্রান্ত অজস্র পোস্টারে। যার মূল দাবি, ‘সহদেবের শাস্তি চাই। ধর্ষককে প্রাপ্য শাস্তি দিতে হবে।’ যদিও মুখ বাঁচাতে লক্ষ্মণ জানিয়েছেন, ‘শুধু ধর্ষণের মামলা কেন, যে কোনও মামলারই আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমার ভাইপো হোক, আমার ছেলে হোক, আমার দলের লোক হোক যে দোষ করবে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতেই হবে প্রশাসনকে। দু’বছরের পুরনো মামলা। আর এখন হঠাৎ করে আমাকে জড়িয়ে পোস্টারিং করা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হল, সামনে দুর্গাপুর পুরসভা ভোট। বিরোধীরা এই দিয়ে সেখানে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চায়।’