নিজস্ব প্রতিনিধি: দুইজনে ছিল ফেসবুক ফ্রেন্ড। দুইজনই দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়া। দুইজনই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে একই সঙ্গে। দেড় দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পরেও তাঁদের সন্ধান না পেয়ে শেষে পুলিশের দ্বারস্থ হয় এক ছাত্রের পরিবার। কিন্তু অভিযোগ, তিন-তিনটি থানাতে গেলেও কোথাও সেই অভিযোগ নেওয়া হয়নি। শেষে পুলিশ সুপারকে চিঠি লিখলেন তাঁরা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায়। এক পড়ুয়ার বাস রাজগঞ্জে(Rajganj), আরেক পড়ুয়ার বাস ময়নাগুড়িতে(Moynaguri)।
জানা গিয়েছে, নিখোঁজ দুই পড়ুয়া হল তারিফ হোসেন(১৭) ও বিজয় বিশ্বাস(১৭)। তারিফ রাজগঞ্জের কুকুরযান হাইস্কুলের(Kukurjan High School) ছাত্র। বাড়ি ওই এলাকারই চাউলহাটি এলাকায়। অন্যদিকে বিজয়ের বাড়ি ময়নাগুড়ির হাসপাতালপাড়া এলাকায়। সে ময়নাগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলের(Moynaguri Boys High School) ছাত্র। দুইজনের পরিচয় হয়েছিল ফেসবুকের মাধ্যমে। গত শনিবার তারিফ হোসেনের বাড়িতে বেড়াতে আসে বিজয় বিশ্বাস। দিনভর দুই বন্ধু মিলে আনন্দ করবার পর রাতে তারিফের বাড়িতেই ছিল বিজয়। রবিবার সকালে বিজয়কে বাসে তুলবার জন্য একটি টোটো রিক্সা করে দুই বন্ধু মিলে জলপাইগুড়ি(Jalpaiguri) কদমতলা এলাকায় আসে। এরপর থেকেই দুজনের মোবাইল সুইচ অফ হয়ে যায়। তারপর থেকে তাদের সঙ্গে কোনওভাবেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। সারাদিন ধরে ছেলেকে খুঁজেও তাকে না পেয়ে শেষে ছেলেকে খুঁজতে ময়নাগুড়িতে চলে যান তারিফের বাবা মোবারক হোসেন। সেখানে তিনি বিজয়ের বাড়িতে গিয়ে গোটা ঘটনা জানান। এরপ্র দুই পরিবার আসে ময়নাগুড়ি থানায়। কিন্তু সেখানে কোনও অভিযোগ নেয়নি পুলিশ। কেননা দুই পড়ুয়া নিখোঁজ হয় জলপাইগুড়ি শহর থেকে। তাই ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ এই ঘটনায় মাথা ঘামাতে চায়নি।
এর জেরে দুই পরিবার চলে আসে জলপাইগুড়ি টাউন থানায়। কিন্তু সেখানেও তাঁদের অভিযোগ নেওয়া হয়নি। বরঞ্চ তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় রাজগঞ্জ থানায়। কিন্তু সেখানেই এই ঘটনার অভিযোগ না নিয়ে তাঁদের আবারও পাঠিয়ে দেওয়া হয় জলপাইগুড়ি থানায়। এই ভাবে গতকাল বিকেল থাকে রাত পৌনে ৩টে পর্যন্ত জেলার ৩টি থানায় চরকি পাক খেয়েও তারা মিসিং ডাইরি করতে না পেরে সোমবার সকালে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান। সেখানে তাঁরা দেখা করেন ডিএসপি হেডকোয়ার্টার সমীর পালের(Samir Pal) সঙ্গে। সব ঘটনা শুনে ওই উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক অবিলম্বে অভিযোগ জমা নেওয়ার জন্য রাজগঞ্জ থানার পুলিশ আধিকারিককে নির্দেশ দেন। যদিও পুলিশের এই ব্যবহারে জেলার জনতার মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ঘটনার জেরে সমীর পাল বলেন, ‘অভিযোগ জমা নিতে রাজগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ কেন তাদের সঙ্গে এই ধরনের আচরন করল তা তদন্ত করা হবে। সেই সময় কারা ডিউটি অফিসার ছিল তা খতিয়ে দেখে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।’