নিজস্ব প্রতিনিধি: উত্তরাখণ্ডের রামগড়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি হচ্ছে। সেই প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নতুন করে বিতর্ক টেনে আনলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাঁর মন্তব্য নিয়ে একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানেই তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘বিশ্বভারতী আজ পশ্চিমবঙ্গ ভারতী বা বোলপুর ভারতী হয়ে গেছে। এটা হতে দেওয়া হবে না।’ বিদ্যুৎ যে এই মন্তব্যের মাধ্যমে আদতে রাজ্য সরকার ও রাজ্যের শাসক দলকেই আক্রমণ করেছেন সেটা বুঝতে পেরে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বোলপুরের তৃণমূল বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহাও। সাফ জানিয়েছেন, ‘বিশ্বভারতী চালাতে ব্যর্থ হয়ে উপাচার্য এই সব বলছেন।’
যে ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে সেখানে যে বিদ্যুৎকে শুধু রাজ্য সরকার বা রাজ্যের শাসক দলকেই সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে তাই নয়, বিশ্বভারতীর শিক্ষাকর্মীসহ অধ্যাপকদেরও সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে। বিদ্যুতের অভিমত, ‘উত্তরাখণ্ডের রামগড়ে বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি হচ্ছে। রামগড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি বাড়ি ছিল। সেই বাড়ির আশপাশে বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় স্যাটেলাইট ক্যাম্পাস তৈরির জন্য বিশ্বভারতীকে ৪৬ একর জমি দিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার। নৈনিতাল থেকে ৩২ কিলোমিটার উপরে এই ক্যাম্পাস তৈরি হচ্ছে। বিশ্বভারতীর আবেদন মতো ১৫০ কোটি টাকাও বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। সেই ক্যাম্পাসকে দাঁড় করানোর দায়িত্ব নিতে হবে বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদেরই। তাই শান্তিনিকেতন থেকে রামগড়ে গিয়ে অধ্যাপকদের সেই দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা সেখানে না গেলে তো সেটা উত্তরাখণ্ড বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যাবে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে না। এটা নিয়ে অনেক সমালোচনা হচ্ছে৷ আমি ও কেন্দ্রীয় সরকার নাকি বিশ্বভারতীকে এখান থেকে নিয়ে চলে যাচ্ছি৷ অনেকে বলছেন, এবার নাকি বদলি করে দেওয়া হবে! এটা কি সম্ভব? আমি জানতাম বিশ্বভারতীর শিক্ষকরা বুদ্ধিমান। কিন্তু, যেসব শিক্ষক এই ধরনের কথা বলেন তাঁদের কী বলব! যদি সুযোগ থাকত, এই ধরনের শিক্ষকরা যাতে এখানে পড়াতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা আমি করতে পারতাম৷ কিন্তু সেই সুযোগ নেই। বিশ্বভারতী আজ পশ্চিমবঙ্গ ভারতী বা বোলপুর ভারতী হয়ে গিয়েছে। উপাসনাগৃহের সামনের রাস্তা রাজ্য সরকার নিয়ে নিচ্ছে। তাতে ঐতিহ্যবাহী ভবন ও ভাস্কর্যের ক্ষতি হচ্ছে।’ জানা গিয়েছে, গত ২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনয় ভবনের শারীরশিক্ষার মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎবাবু তাঁর এই অভিমত রেখেছেন।