নিজস্ব প্রতিনিধি: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের(Viswabharati University) প্রাক্তন উপাচার্য(Former VC) বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে(Bidyut Chakrabarty) এদিন অর্থাৎ বুধবার দ্বিতীয় দফায় জেরা শুরু করল শান্তিনিকেতন থানার(Shantiniketan PS) পুলিশ। এদিন শান্তিনিকেতনের পূর্বিতা বাসভবনে গিয়ে তাঁকে জেরা করছেন শান্তিনিকেতন থানার ওসি কস্তুরী মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল। এর আগেও গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) নির্দেশে তিনটি মামলায় তাঁকে জেরা করার জন্য গিয়েছিলেন থানার আধিকারিকেরা। কিন্তু সেদিন তিনি তদন্তে সহযোগিতা করেননি বলেই অভিযোগ উঠেছিল। এদিনও বিদ্যুতের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ উঠেছে। মূলত মোট পাঁচটি মামলা দায়ের হয়েছে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে এই ৫টি মামলার জন্য তাঁকে ১ ঘন্টা করে মোট ৫ ঘন্টা জেরা করতে পারবে। তবে এক দিনেই ওই ৫ ঘন্টার জেরা করা যাবে না। সেই মতোই কাজ করছে পুলিশও। এদিনও জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও রেকর্ডিং করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে অবসর নেওয়ার পরেও বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বাসভবন পূর্বিতা জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। তাই বিদ্যুৎবাবুকে সেখান থেকে উৎখাতের দাবিতে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কর্মী ও পড়ুয়াদের একাংশ। গতকাল তাঁরা শান্তিনিকেতনের সেন্ট্রাল অফিসের সামনে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে তাঁরা দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান। এদিনও সেই বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি গত তিন বছর শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির মাঠে অনুষ্ঠিত হয়নি পৌষমেলা। পুরনো মাঠেই মেলা ফেরানোর দাবিও এখন ক্রমশ জোরদার হচ্ছে বিশ্বভারতীর অন্দরেই। পাশাপাশি বিদ্যুৎবাবুর আমলে বিশ্বভারতীর যে সমস্ত কর্মী, অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল, তা তোলার আর্জিও জানানো হচ্ছে জোরালো ভাবেই। এই মর্মে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয়কুমার মল্লিকের কাছে একটি স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কর্মী ও পড়ুয়াদের তরফে।
উল্লেখ্য, গত ৮ নভেম্বর উপাচার্যের পদ থেকে অবসর নেন বিদ্যুৎবাবু। অবসর নেওয়ার পরেও তিনি উপাচার্যের বাসভবন পূর্বিতায় জবরদখল করে রয়েছেন বলে অভিযোগ। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন ভিবিউফা সরব হয়ে নতুন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে অভিযোগ জানায়। কিন্তু তারপরেও তিনি পূর্বিতায় বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তাই তাঁকে উৎখাত করার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন অনেকেই। যদিও সোমবার বিশ্বভারতীর তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিদ্যুৎবাবুর মেয়াদ শেষ হলেও তিনি আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পূর্বিতায় থাকতে চান। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক বিশ্ববিদ্যালয়কে তাঁর সেই ‘শেষ ইচ্ছা’কে মঞ্জুর করতে নির্দেশ দিয়েছে। ফলে বিক্ষোভ হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মন্ত্রকের নির্দেশ মতো চলবে।