নিজস্ব প্রতিনিধি: ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনার তদন্তে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আধিকারিকরা শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর, সোনারপুর এবং নরেন্দ্রপুর থানা এলাকায় তদন্তে যান। সেখানে মানবাধিকার কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে যান বিজেপির প্রতিনিধি দল। আর এই নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়। মানিবাধিকার কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে বিজেপির প্রতিনিধি দলের যাওয়া নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল এবং সিপিএম।
এদিন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আধিকারিকদের দলের সঙ্গে দেখা যায় বিজেপি নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের মত, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কার্যত তদন্তের নামে ‘প্রহসন’ চালাচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, কেন ঘটনার তদন্তে বিজেপি নেত্রীকে নিয়ে গিয়েছেন তদন্তকারী দল? শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে সরব হয় তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই বলছি যে, মানবাধিকার কমিশন ও বিজেপির মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। মানবাধিকার কমিশনের কাছে বিজেপি যখন যে ধরণের তালিকা তুলে দিচ্ছে সেই তালিকা অনুযায়ী তারা গ্রেফতার করছে।’ সুখেন্দুশেখরের আরও সংযোজন, ‘আসলে বাংলার মানুষ বিজেপিকে গত বছর রাজনৈতিকভাবে ঘর ছাড়া করে দিয়েছে। সেই শোক ওরা ভুলতে পারছে না। তার জন্য ওরা একটা প্রতিহিংসার রাজনীতি করে। যেখানে সেখানে আমাদের দলের লোককে হেনস্থা করছে। মানবাধিকার কমিশনের মতো সাংবিধানিক সংস্থাকে এরা নিজেদের ক্রীতদাস বানানোর চেষ্টা করছে। এটাই তার প্রমাণ, বিজেপি সাংসদের বাড়িতে গোপনে তারা মিটিঙ করছে।’ অন্যদিকে এই ঘটনা নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেছে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। সিপিএম নেতা এদিন বলেন, ‘বিজেপি নেতারা সঙ্গে যাবেন কেন? বিজেপি নেতাদের তো ওটা কাজ নয়।…মানবাধিকার কমিশন নিজের কাজ করুক, এটাই আমরা চাই।’
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশও প্রশ্ন তুলছে, যেখানে জাতীয় মানাবধিকার কমিশনের মতো সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে বিজেপি নেত্রী রয়েছেন, সেই তদন্ত কতটা নিরপেক্ষ হবে? উল্লেখ্য এর আগেও রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনার তদন্তে আসে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আধিকারিকরা। কাঁকুড়গাছি, ভাটপাড়া, জগদ্দল ও আমডাঙায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল ভোট পরবর্তী হিংসায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান। স্থানীয় থানার সঙ্গেও কথা বলেন আধিকারিকরা। রাজ্যে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর হিংসায় শাসক ও বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি সরকার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ ওঠে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের তরফে।