নিজস্ব প্রতিনিধি: সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের গুয়াহাটি পর্যন্ত বৈদ্যুতিক ট্রেন চালু হয়েছে। নিউ জলপাইগুড়ির পর থেকে গুয়াহাটি হয়ে ডিব্রুগড় বা আগরতলা পর্যন্ত বিস্তৃর্ণ রেলপথ বৈদ্যুতিন ছিল না। ফলে ডিজেল ইঞ্জিনের সাহায্য়ে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চালাতে হতো রেলকে। অবশেষে কাটিহার ডিভিশন থেকে নিউ জলপাইগুড়ি হয়ে গুয়াহাটি পর্যন্ত অংশ বিদ্যুতায়ন করা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন রেলের লাভ হবে, তেমনই যাত্রী ও পরিবেশের বিপুল লাভ হবে বলে দাবি রেলমন্ত্রকের। আসুন জেনে নেওয়া যাক কার কী কী লাভ হল এই রেলপথ বৈদ্যুতিক হয়ে যাওয়ায়।
সম্প্রতি নয়া দিল্লি রেলস্টেশন থেকে ব্রক্ষ্ণপুত্র মেল ইলেকট্রিক ইঞ্জিনের সাহায্য়ে সরাসরি অসমের কামাক্ষা স্টেশনে পৌঁছে ইতিহাস তৈরি করল। দীর্ঘ কয়েক বছরের চেষ্টায় অবশেষে এই রেলপথ বিদ্যুতায়ন হয়েছে। এছাড়া একটি পণ্যবাহী ট্রেনও ইলেকট্রিক ইঞ্জিনের সাহায্য়ে সরাসরি গুয়াহাটি পৌঁছেছে। রেলের দাবি এই রেলপথ বিদ্যুতায়নের কারণে বছরে ৩০০ কোটি টাকার বিদেশী মুদ্রা বাঁচবে রেলের। পাশাপাশি দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেনগুলি। মাঝপছে ইঞ্জিন পরিবর্তন করতে হবে না।
- রেলের দাবি, গুয়াহাটি পর্যন্ত বিদ্যুতায়নের কারণে বছরে ৩০০ কোটি টাকার বিদেশী মুদ্রা বাঁচবে রেলের। ওই সমপরিমান টাকা উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ডিজেল ( HSD Oil) কিনতে হত রেলকে। কারণ এই রেলপথে ডিজেল ইঞ্জিনগুলির জন্য আর বছরে ৩৪০০ কিলোলিটার উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ডিজেল কিনতে হবে না রেল কর্তৃপক্ষকে। যা মূলত বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় রেলকে।
- এতদিন রেলের ট্রাকশন পরিবর্তন অর্থাৎ ইলেকট্রিক থেকে ডিজেল ইঞ্জিন পরিবর্তনের জন্য নিউ কোচবিহার বা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে আর দীর্ঘক্ষণ ট্রেনকে দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে না। এতে নির্বিঘ্ন ট্রেন পরিচালনার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে রেলের।
- এই রেলপথের বিদ্যুতায়নের কারণে কাটিহার থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত প্রায় ২ ঘণ্টা সময় কম লাগবে ট্রেনগুলির। এর পাশাপাশি ট্রেনের গতি বেশি হওয়ার কারণে এই সেকশনে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি ট্রেন চালানো যাবে।
- বিদ্যুতায়নের ফলে এবার থেকে ভারী মালবাহী ট্রেনগুলি উচ্চ গতিতে চালানো যেতে পারে এই রেলপথে।
- রেললাইনের বর্ধিত ক্ষমতার কারণে আরও ১০ শতাংশ নতুন যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করা যেতে পারে। পাশাপাশি রেলের আয় বাড়াতে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলি থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো অত্যাধুনিক, আরামদায়ক দ্রুতগতির ট্রেন চালানো সম্ভব হবে।
- এছাড়া EOG সিস্টেমের পরিবর্তে HOG প্রযুক্তি ব্যবহার করে LHB রেকের দু’প্রান্তে লাগানো দু’টি পাওয়ার কারের ডিজি সেটের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব। এতেও প্রচুর পরিমান তেল বাঁচবে। পরিবেশে ক্ষতিকারক প্রভাবও বন্ধ করা যাবে। উল্লেখ্য এই পাওয়ার কারে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১০০ লিটার ডিজেল পোড়ে। সেই সঙ্গে ব্যপক শব্দ উৎপন্ন হয়।
- ডিজেল ইঞ্জিনের ব্য়বহার কমে যাওয়ায় এই রেলপথে গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস পাবে ফলে বাতাসে কার্বনের পরিমানও কমবে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে।