নিজস্ব প্রতিনিধি: নিজেকে পরিচয় দিতেন কৃষ্ণের অবতার (Lord Krishna) হিসেবে। আর নিজেকে কৃষ্ণ ভেবে শুরু করেছিলেন লীলাখেলা। আশ্রমের মধ্যে মহিলা ভক্তদের উপরে যৌন নির্যাতন চালানো থেকে শুরু করে তরুণী ভক্তদের অশ্লীল মেসেজ পাঠানো-কিছুই বাদ রাখেননি। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। শনিবার ভণ্ড সাধুর কুকীর্তির পর্দাফাঁস করলেন এক তরুণী ভক্তের মা ও মামা। আর তার পরেই কৃষ্ণরূপী ভণ্ড সাধুকে গাছে বেঁধে গণধোলাই দিলেন গ্রামবাসীরা। কার্যত যাকে বলে প্রহারেন ধনঞ্জয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পুলিশ গিয়ে উত্তেজিত গ্রামবাসীদের হাত থেকে সাধু ও তার দুই সাগরেদকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ভণ্ড সাধু অমলেশ চক্রবর্তী (Amalesh Chakroborty)।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা থানার (Patharpratima Police Station) অচিন্ত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের (Achintyanagar GP) অন্তর্গত আই প্লট এলাকার বিষ্ণুপুরে আচমকাই ‘মহানমিস্থলি আশ্রম’ নামে একটি আশ্রম গড়ে তোলেন অমলেশ চক্রবর্তী (Amalesh Chakroborty) নামে এক সাধু। নিজেকে কৃষ্ণের অবতার বলে পরিচয় দিতেন। কিছুদিনের মধ্যেই আশ্রমটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অভিযুক্ত চাকরি থেকে শুরু করে রোগমুক্তির জন্য মাদুলি, জলপড়া দিতেন আশ্রমের প্রধান সাধু অমলেশ চক্রবর্তী। গত কয়েক মাস ধরেই আশ্রমটিতে অবিবাহিত তরুণী ও যুবতীদের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছিল। যদিও আচমকাই ওই অবিবাহিতা তরুণী ও যুবতীদের মনে কৃষ্ণপ্রেম কেন জেগে উঠল, তা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছিল।
ভালই চলছিল ধর্মের নামে ব্যবসা। কিন্তু আচমকাই বিপত্তি। বিষ্ণুপুর এলাকার এক তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয় আশ্রমের প্রধান মহারাজ অমলেশ চক্রবর্তীর। তার পরেই ওই তরুণীর আচরণ পাল্টে যায়। মেয়েকে ফোনে দীর্ঘসময় ব্যস্ত থাকতে দেখে সন্দেহ হয় ওই তরুণীর মায়ের। ফোন দেখতে চাইলে রাগে ও অভিমানে ফোনটি ছুঁড়ে ভেঙে ফেলেন ওই তরুণী। তখন বুদ্ধি খাটিয়ে ভাঙা ফোন থেকে সিমকার্ডটি বের করে অন্য ফোনে লাগিয়ে সাধু মহারাজের কুকীর্তির কথা জানতে পারেন তরুণীর মামা। ভাগ্নীর নাম করে অমলেশ চক্রবর্তীকে নানা প্রলোভনমূলক মেসেজ পাঠাতে থাকেন। সেই ফাঁদে পা দিয়ে তরুণীকে অশ্লীল মেসেজ ও কুপ্রস্তাব পাঠাতে থাকেন ভণ্ড সাধু। সেই প্রমাণ গ্রামবাসীদের দেখান তরুণীর মামা। এদিন সকালে আশ্রমে চড়াও হয়ে ভণ্ড সাধুকে বাইরে বের করে এনে গণধোলাই দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গাছে বেঁধে রেখে খবর দেওয়া হয় পাথরপ্রতিমা থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভণ্ড সাধু ও তার দুই সাগরেদকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।