নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে প্রচারে এসে তাঁর বাড়িতে পাত পেড়ে খেয়ে গিয়েছেন দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাড়িতে অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসায় সাহায্য করার গালভরা আশ্বাস দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। চিন্তিত বাবার পাশে বসেই দিল্লির এমসে নিয়ে গিয়ে মেয়ের চিকিৎসা করাতে সাহায্য করবেন বলে গিয়েছিলেন অমিত শাহ। অথচ এক বছর পার হতে চললেও কোনও সাহায্য তো দূর অস্ত খোঁজও নেয়নি কেউ।
বাঁকুড়ার চতুরডিহি গ্রামের বিভীষণ হাঁসদা, তাঁর বাড়িতেই এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এই বিজেপি কর্মীর দাবি, কেন্দ্রীয় সাহায্য পাননি, শুধু একবার স্থানীয় বিজেপি সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার এসেছিলেন তাঁর বাড়িতে। তবে তখন এসেছিলেন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা। বিভীষণের মেয়ে রচনার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ইঞ্জেকশন পৌঁছে দিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। কয়েকবারের পর সেই সাহায্যও বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই সেই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এবার ফের নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
আবারও বিভীষণের বাড়িতে ফের পৌঁছে গেল স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারা। তাঁর হাতে তুলে দিলেন মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র। বিভীষণ হাঁসদা জানিয়েছেন, মেয়ে রচনার ডায়াবিটিসজনিত কঠিন অসুখ রয়েছে। প্রতিমাসে প্রচুর টাকা খরচ হয় মেয়ের চিকিৎসায়। যা তাঁর মতো দরিদ্র মানুষের পক্ষে বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কথা পাশে বসা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে জানান। তিনিই আশ্বাস দিয়েছিলেন দিল্লির এইমসে নিয়ে গিয়ে রচনার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেবেন। সেই দিনটি ছিল একুশের নির্বাচনের আগে ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর। এক বছর পর হলেও আসেনি কোনও কেন্দ্রীয় সাহায্য।
অথচ প্রতিমাসেই ৫০০০ টাকার বেশি খরচ হয় রচনার চিকিৎসায়। কয়েকমাস রাজ্য সরকার ওষুধপত্র দিলেও তা বন্ধ হয়েছে। দিনমজুর বিভীষণ আর তাঁর স্ত্রী মনিকা হাঁসদা চিন্তায় চুল ছিঁড়ছিলেন। ঠিক সেই সময় সোমবার দুপুরে চতুরডিহি গ্রামে বিভীষণের বাড়িতে হাজির হন বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লকের বিডিও অঞ্জন চৌধুরী ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ) অরিজিৎ কুন্ডু। বিভীষণের হাতে আগামী এক মাসের জন্য রচনার প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও ইনসুলিন ইঞ্জেকশন তুলে দেন তাঁরা। ফলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন অসহায় দম্পতি।