নিজস্ব প্রতিনিধি: নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) জমানায় বার বার অভিযোগ উঠেছে জোর করে অ-হিন্দি ভাষী রাজ্যগুলির ঘাড়ে হিন্দি(Hindi) ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার। শুধু তাই নয়, নানান সময়ে অভিযোগ উঠেছে হিন্দিতে কথা না বললে পরিষেবা না প্রদান করার অভিযোগও। কার্যত সেই প্রয়াস সংক্রমণের মতোই ছড়িয়ে পড়ছিল গোটা দেশে। এরই পাশাপাশি দেখা যাচ্ছিল দেশের যে সব শহরে মেট্রো রেল(Metro Rail) রয়েছে সেখানেও স্টেশনের নাম লেখা হচ্ছিল শুধুমাত্র ইংরেজি ও হিন্দিতে। এর জেরে নানান রাজ্যেই নানান সময়ে বিক্ষোভ হতেও দেখা গিয়েছে। কর্ণাটক(Karnataka) বিধানসভা কেন্দ্রে লজ্জার হারের পরে এই জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার নীতি থেকে পিছু হঠছে মোদি সরকার। ভাষার ওপর জোর না দিয়ে রঙের ওপর এখন জোর দিতে চাইছে রেলমন্ত্রক। অর্থাৎ দেশের সব রেল স্টেশনকেই একই রঙে রাঙিয়ে তোলার পথে হাঁটা দিতে চলেছে কেন্দ্র সরকার। ঠ্যালার নাম বাবাজি বোধহয় একেই বলে।
আরও পড়ুন জুন-জুলাই মাসে জোড়া Zero Shadow পেতে চলেছে কলকাতা
রেলমন্ত্রক(Rail Ministry) সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার দেশজুড়ে অভিন্ন রঙে সব রেল স্টেশনের ফলকগুলি সাজিয়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশে মোট ৭ হাজার ৩০০টি রেল স্টেশন রয়েছে। সেই সব স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে নামের যে ফলক রয়েছে সেখানেই আসছে এই বিরাট পরিবর্তন। এই বিষয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ‘স্টেশনের ফলকের রং বিভিন্ন রাজ্যে আলাদা। এক্ষেত্রে সামঞ্জস্য আনতেই এই উদ্যোগ। ভারতীয় পতাকার রঙে নয়া বোর্ডগুলি শোভা পাবে। গেরুয়া, সাদা, সবুজ, মাঝে গাঢ় নীলের ওপর স্টেশনের নাম লেখা থাকবে সাদা দিয়ে। যে অংশে নাম লেখা হবে, সেখানে ওপরে থাকবে আঞ্চলিক ভাষায় স্টেশনের নাম। তার নীচে হিন্দি ও তলায় ইংরেজিতে।’ অর্থাৎ স্টেশনে স্টেশনে আঞ্চিল ভাষাকে বাদ দেওয়ার যে প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছিল তা থেকে পিছু হঠছে মোদি সরকার। সেই সঙ্গে One Nation, One Station নীতিতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে আঞ্চলিক ভাষাকেও। কার্যত কর্ণাটকের হারের ধাক্কার জেরেই যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেই বিষয়ে একমত ওয়াকিবহাল মহল।
আরও পড়ুন বাংলার মিড ডে মিলের Dinning Hall ‘মডেল’ ভারতে
তবে বিরোধিতা এখনও আছে। সেই বিরোধিতা আসছে দক্ষিণ ভারত থেকে। সেখানে দাবি উঠেছে, রেল স্টেশনের নাম লেখা হোক শুধুমাত্র আঞ্চলিক ভাষা ও ইংরেজিতে। কেননা তাঁদের দাবি, হিন্দি প্রচলিত শুধুমাত্র উত্তর ভারতের কয়েকটি রাজ্যেই। যার মধ্যে আছে উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, রাজস্থানের মতো ২-৩টি রাজ্য। বাকি সব রাজ্যেরই নিজস্ব ভাষা রয়েছে। যেমন মধ্যপ্রদেশে ও ছত্তিশগড়ে ভোজপুরী, বিহারে ও ঝাড়খণ্ডে মাগধী, কেরলে মালায়ালাম। সেই সব রাজ্যের স্টেশনে কেন হিন্দি লেখা হবে। হিন্দি তো দেশের রাষ্ট্রভাষা নয়। দেশের সংবিধানে তো কোথাও হিন্দিকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়নি। তাহলে কেন হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে অ-হিন্দি ভাষী রাজ্যগুলির ঘাড়ে। আর পাঁচটা ভাষার মতোই হিন্দি শুধুমাত্রই আঞ্চলিক ভাষা, রাষ্ট্রভাষা নয়।