নিজস্ব প্রতিনিধি: ইঙ্গিত মিলেছিল ২৪ ঘন্টা আগেই। এবারে তা হাতেগরমে প্রমাণ হয়ে উঠে এল। শনিবার ভোরে কলকাতায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হল ১৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি বেশি। অর্থাৎ নভেম্বরের শেষে বঙ্গে আবার ফিরেছে শীতের আমেজ। এদিন জেলাগুলিতেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রির আশেপাশেই রয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর এদিন স্পষ্টতই জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন অনেকটাই কমবে কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যের তাপমাত্রা। তবে আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তাঁদের হিসাব মতো বাংলার দোড়গড়ায় হাজির হয়েছে শীত। তবে তার বঙ্গে প্রবেশে বাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে সাগরের হাওয়া। যে হাওয়াকে আবার পিছন থেকে ঠেলা দিচ্ছে এক ঘূর্ণাবর্ত যা এদিনই নিম্নচাপে পরিণত হবে। সেই নিম্নচাপের হাত ধরে আগামী সপ্তাহে দক্ষিণ ভারেত ভালো বৃষ্টি যেমন হবে তেমনি বাংলার পরিমণ্ডলেও ঢুকবে বিস্তর জলীয় বাষ্প। যার জেরে বাংলার আকাশ ঢাকা পড়বে মেঘে। চড়বে পারাও। তবে সেই মেঘের জেরে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, উত্তর-পশ্চিমের শুকনো শীতল হাওয়া এবার কিছুটা হলেও তেজি হয়েছে। তার জেরে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে দ্র্যত পারা পতন শুরু হতে চলেছে। উচ্চচাপের গেরো কেটে মেঘ সরে আকাশ পরিষ্কার হতেই সেখানে ফিরেছে হেমন্তের ঠান্ডা। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও ৩-৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমতে পারে। তবে বাংলাজুড়ে বাড়বে কুয়াশার দাপট। এদিন দার্জিলিং ও কালিম্পঙে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে তবে সমতলে কুয়াশা ভোগাবে আমজনতাকে। বিশেষ করে ভোরের দিকে তা বেশ জমাট বাঁধবে। দৃশ্যমান্যতা কার্যত ৫০০ মিটারের নীচে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলায় জেলায় তা আরও কমে ২৫০ মিটার হতে পারে। সেক্ষেত্রে সড়কপথে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। তবে হাওয়া অফিসের ইঙ্গিত, পুরোদমে দক্ষিণবঙ্গে শীত পড়তে এখনও কিছুটা সময় বাকি। ১৫ ডিসেম্বরের আগে সে অর্থে কলকাতায় শীত পড়বে না।
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত এদিনই নিম্নচাপে পরিণত হতে চলেছে। সেই নিম্নচাপ পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে এবং শ্রীলঙ্কা ও তামিলনাড়ু উপকূলে হাজির হয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটাবে। ২৯ নভেম্বর থেকে সেই বৃষ্টি শুরু হয়ে চলতে পারে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে বাংলায় এর সরাশ্রী কোনও প্রভাব পড়বে না। উত্তর-পশ্চিম হাওয়া তেজি হওয়ায় নিম্নচাপের টানে বাংলার পরিমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ঢুকলেও সে অর্থে বৃষ্টি ঘটাতে পারবে না। তবে সাময়িক ভাবে আগামী সপ্তাহে মেঘের আনাগোনায় পারা চড়তে পারে, এইটুকুই। তবে সাগরে ঘন ঘন নিম্নচাপ তৈরি বন্ধ না হলে বাংলায় শীতের দফারফা হতে বাধ্য।