নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের স্কুলে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির(School Teachers Recruitment Scam) ঘটনায় এদিন অর্থাৎ ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে(Abhishek Banerjee) তলব করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা Enforcement Directorate বা ED। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে এদিন বেলা ১১টা নাগাদ সল্টলেকের CGO Complex’র ED’র কার্যালয়ে হাজিরা দিলেন অভিষেক। এদিন বাড়ি থেকে রওয়ানা দেওয়ার আগে কালিঘাটে গাড়িতে ওঠার আগে সবাইকে হাতজোড় করে নমস্কার করতে দেখা যায় তাঁকে। তাঁর হাজিরাকে ঘিরে এদিন সকাল থেকেই নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে ফেলা হয় CGO Complex। সেখানে সকাল থেকেই বিধাননগর পুলিশের বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এমনকি সেখানে সংবাদমাধ্যমের গাড়ি-সহ বাইরের সমস্ত গাড়ি কমপ্লেক্সের ভিতর থেকে বের করে দেওয়া হয়। CGO Complex-এ এদিন ঢোকা ও বের হওয়াও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ৩ অক্টোবর অভিষেককে তলব করে ইডি। দিল্লিতে দলীয় কর্মসূচি থাকায় সেই সময় যেতে পারেননি অভিষেক। পরে পুজোর সময়ে তলব করা যাবে না বলে নির্দেশ ছিল আদালতের। তলব করলে ৪৮ ঘণ্টা আগে নোটিস পাঠাতে হবে। এমনটাই ছিল নির্দেশ। সেই নির্দেশ মেনেই গত মঙ্গলবার অভিষেকের হাকছে এদিন হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিস পাঠানো হয়। রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেককে এর আগে ১বার করে ED ও CBI’র দফতরে হাজিরা দিতে হয়েছিল। প্রসঙ্গত, গত ৬ মাসে অভিষেককে একাধিকবার তলব করে ED ও CBI। এর আগে ২০মে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তলব করে CBI। এরপর নবজোয়ার যাত্রার মধ্যেই তৃণমূল ‘সেনাপতিকে’ ডেকে পাঠায় ED। দিনটা ছিল ১৩ জুন। এরপর ৩ মাস ছেড়ে গত ১৩ই সেপ্টেম্বর INDIA জোটে সমন্বয় কমিটির বৈঠকের দিন ফের অভিষেককে তলব করে ইডি। ওই দিন বৈঠকে প্রতিবাদ স্বরূপ অভিষেকের চেয়ার ফাঁকা রাখা হয়।
এরপর গত ৩ অক্টোবর দিল্লিতে তৃণমূলের ধরনা ছিল। সে দিনই অভিষেককে আবার ডেকে পাঠান ED আধিকারিকরা। তবে ওই দিন হাজিরা দেননি তৃণমূল সাংসদ। তারপর ৯ অক্টোবর আবারও তলব করে ED। সেই নোটিশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে যান অভিষেক। আদালত সম্পত্তির নথি ED’র কাছে জমা দিতে বলে। ১০ অক্টোবর অভিষেক ED-কে সেই নথি জমা দেন। এদিন আবারও তিনি হাজিরা দিলেন ED’র কার্যালয়ে। জোড়াফুল শিবিরে এদিন অবশ্য সকলেই বেশ আত্মবিশ্বাসী ভাবেই জানিয়েছেন, এর আগে যেভাবে অভিষেক কেন্দ্রীয় এজেন্সির সঙ্গে তদন্তে সহযোগিতা করে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়ে মাথা উঁচু করে বেড়িয়ে এসেছেন, এদিনও ঠিক সেভাবেই বেড়িয়ে আসবেন।
গত ১০ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ED’র কাছে তাদের চাওয়া সমস্ত নথি জমা দিয়েছিলেন অভিষেক। অভিষেকের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব ছাড়াও বিদেশ সফরের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছিল ED’র তরফে। চাওয়া হয়েছিল তাঁর নামে থাকা সংস্থার কিছু নথিও। জল্পনা, তৃণমূল সাংসদের জমা দেওয়া সেই সব নথির বিষয়েই আরও বিশদে জানতে চাইবেন তদন্তকারীরা। নথি সংক্রান্ত প্রশ্নের বেশ কিছু না-পাওয়া উত্তর পেতেই অভিষেককে জেরা করা হবে বৃহস্পতিবার। অভিষেকের জেরা পর্বে Interrogation Room বা জেরা-কক্ষে থাকার কথা তদন্তকারী অফিসারদের। আর তদন্তকারী অফিসারদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক যা যা বলবেন, জেরা-কক্ষে থাকা ক্যামেরায় তার সবটাই রেকর্ড হবে।