নিজস্ব প্রতিনিধি: সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর (Gangasagar) একবার। এই কথা এখন অতীত। রাজ্যের উদ্যোগে এই স্থানে পৌঁছে যাওয়া আর অসম্ভব নয়। কপিল মুনির আশ্রমের প্রধান পুরোহিতও বারবার বলেছেন, গঙ্গাসাগর উন্নয়নে তাঁর ভরসা রয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (CM) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপরেই। আমফান, ফনী থেকে আশ্রমকে রক্ষা করতে তৎপর ছিল প্রশাসন। আবার আসছে অশনি (Ashani)। চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জেলা প্রশাসনের (District Administration) আধিকারিকদের কপালে। চিন্তায় রয়েছেন স্থানীয়রাও। আবার সাগর, নামখানা, পাথরপ্রতিমা দ্বীপ ও সমুদ্র তীরবর্তী এলাকাতেও চলছে জোরকদমে প্রচার।
আবারও তৎপর হয়েছে প্রশাসনে। তৎপর বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ। ব্লক স্তরে খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। প্রতি বিপর্যয়েই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাগর ব্লক। ছোট্ট দ্বীপেই কপিল মুনির আশ্রম। আর চারিদিকে নদী- সাগর। তাই আবারও চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। কারণ বিপর্যয় মানে দেখা যায় ভাঙন। এগিয়ে আসে সাগরের জল। ভেঙে যায় মন্দিরের কাছাকাছি থাকা ছোট দোকানগুলি। জল ঢুকে পড়ে মন্দিরেও। অবস্থার সামাল দিতে পেতে হয় যথেষ্ট বেগ। ভাঙন না রুখতে পারলে তো আশ্রম সহ এলাকা তলিয়ে যাবে! তাই ৩ বছর ধরে উদ্যোগী জেলা প্রশাসন তথা রাজ্য সরকার। রাজ্যের পুর দফতর, গঙ্গাসাগর- বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ ভাঙন রোধে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে। কাজ করবে সেচ এবং বনদফতরও। উল্লেখ্য, এতিমধ্যেই মিলেছে সেই ছাড়পত্র। ঘাটালের মত এখানেও মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে আশাবাদী স্থানীয়রা। কেন্দ্রের সহযোগিতা দরকার ভারতের অন্যতম এই তীর্থস্থান রক্ষায়। কারণ এই ঐতিহ্য তো দেশেরও। আপাতত জেলা প্রশাসন ও রাজ্য সরকার (State Govt) তৎপর অশনি মোকাবিলায়। বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। চলছে মাইকিং।
জানা গিয়েছে, উপকূলবর্তী এলাকার পাশাপাশি মৌসুনি দ্বীপ এবং সাগরের ঘোড়ামারা দ্বীপেও খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম (Control Room)। জরুরি ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকরা করেছেন একাধিক বৈঠক। বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য তৈরি করা হয়েছে রূপরেখা। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে তৈরি করা হয়েছে ৫ টি এমার্জন্সি রেসপন্স টিম। জানা গিয়েছে প্রতি দলে ২০ জন করে সিভিল ডিফেন্স সদস্য আছেন। আলিপুর জেলা সদর এবং প্রতিটি মহকুমা ও ব্লক অফিসে করা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। তৈরি থাকছে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দল। তৎপর নৌ বাহিনীও। খুলে দেওয়া হয়েছে সাইক্লোন শেল্টার। মজুত রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, পানীয় জল এবং ত্রিপল। বিপদ বুঝে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রস্তুত প্রশাসন। আশ্বস্ত করা হচ্ছে এলাকাবাসীদের। মৎস্যজীবীদের দ্রুত ফিরে আসার আবেদন জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে নির্দেশ আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত মাছ ধরতে না যাওয়ার। আগামী ৯ মে থেকে আগামী ১৩ মে পর্যন্ত থাকছে বাড়তি নজরদারি। চলছে জোরকদমে প্রচার। করা হচ্ছে সচেতন। জেলাকে রক্ষা করতে তৎপর প্রশাসন।