নিজস্ব প্রতিনিধি: এবারও বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মানে দক্ষিণ কলকাতার জয়জয়কার। রাজ্য সরকারের প্রকাশ করা তালিকায় দেখা যাচ্ছে প্রায় সমস্ত বিভাগেই দক্ষিণ কলকতার পুজোগুলি বেশি স্থান পেয়েছে। পুজোতেও টেক্কা দিয়েছেন মন্ত্রী-বিধায়করা। তবে উত্তর কলকাতায় অন্যতম আকর্ষণ শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব দর্শনার্থীদের ভিড় টানলেও বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মানে টেক্কা দিল অন্য়ান্য পুজোগুলি। সুজিত বসুর শ্রীভূমি এবার বুর্জ খলিফা তৈরি করে সকলের নজর টেনেছেন। কিন্তু এই পুজো কমিটির নাম নেই তালিকায়। সেরার সেরা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে ৩৬টি পুজো।
মোট ১৩টি বিভাগে সেরা পুজো নির্বাচিত করেছেন নির্বাচকমণ্ডলী। বিভাগগুলি হল, সেরার সেরা, সেরা মণ্ডপ, সেরা প্রতিমা, সেরা আলোকসজ্জা, সেরা সাবেকি, সেরা ভাবনা, সেরা পরিবেশবান্ধব পুজো, সেরা ঢাকেশ্রী, সেরা বিশ্ব বাংলা ব্র্যান্ডিং, সেরা কোভিড সচেতনতা (স্বাস্থ্যবিধি), সেরা কোভিড ওয়্যারিয়র, অন্য ভাবনা এবং বিশেষ পুরস্কার। সেরার সেরা বিভাগে পুরস্কার পাচ্ছে ৩৬টি পুজো কমিটি। সেরা মণ্ডপ, প্রতিমা ও সেরা বিশ্ব বাংলা ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য ৫টি করে এবং সেরা আলোকসজ্জায় ৩টি পুজো কমিটিকে বাছাই করা হয়েছে। মোট ১০টি পুজো কমিটি পাচ্ছে সেরা কোভিড সচেতনতা (স্বাস্থ্যবিধি) পুরস্কার।
সেরার সেরায় প্রথম দশটি পুজো কমিটি হল বড়িশা ক্লাব, বাবুবাগান, চক্রবেড়িয়া, হিন্দুস্থান ক্লাব, চেতলা অগ্রণী, দক্ষিণ কলকাতা সর্বজনীন, টালা প্রত্যয়, কালীঘাট মিলন সঙ্ঘ, ত্রিধারা এবং একডালিয়া এভারগ্রীন। আরও ২৬টি পুজোও এই বিভাগে সম্মান পাচ্ছে। সেরা মণ্ডপ তৈরি করে বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মান পাচ্ছে পাঁচটি পুজো কমিটি। সেগুলি হল রাজডাঙা নব উদয় সংঘ। সেলিমপুর পল্লী, কুমারটলি সর্বজনীন, সমাজসেবী এবং সল্টলেক এফডি ব্লক। সেরা প্রতিমায় বেহালা নতুন দল, কলেজ স্কোয়ার, সিংহী পার্ক, আলিপুর ৭৮ পল্লী ও যুবমৈত্রী। সেরা আলোকসজ্জায় তাক লাগিয়েছে সিকদারবাগান সর্বজনীন, হাওড়া শিবপুর মন্দিরতলা ও বাটাম ক্লাব। সেরা সাবেকি পুজোয় সকলকে টেক্কা দিল আদি বালিগঞ্জ এবং টালা বারোয়ারী। অপরদিকে কৃষক আন্দোলনের পটভূমিকায় তৈরি মণ্ডপ গড়ে সেরা ভাবনায় পুরস্কার পাচ্ছে দমদম পার্ক ভারতচক্র। চলতি বছরে সেরা কোভিড সচেতনতা (স্বাস্থ্যবিধি) পুরস্কার পাচ্ছে সল্টলেক একে ব্লক, কসবা বোসপুকুর শীতলা মন্দির ও ভবানীপুর ৭৫ পল্লী।
প্রতি বছরই পুজো কমিটিগুলিকে উৎসাহ দিতে রাজ্য সরকার শারদ সম্মান দেওয়া শুরু করেছে। ২০১৩ সাল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মান চালু করেছিলেন। এবার করোনা আবহেই রাজ্যজুড়ে হচ্ছে পুজো। করোনাবিধি মাথায় রেখেই নিজেদের মতো করে মণ্ডপ ও প্রতিমা সাজিয়ে তুলেছেন পুজো কমিটিগুলি। শিল্পীদের সৃজনশীলতায় মণ্ডপের থিম হয়ে ওঠে নান্দনিক ও বর্ণময়। পাশাপাশি এর মাধ্যমে পুজো কমিটিগুলি জনসাধারণকে বিশেষ কিছু বার্তাও দিয়ে থাকেন। সবমিলিয়ে বাংলার দুর্গাপুজো আজ বিশ্বজনীন হয়ে উঠেছে। সোমবার ষষ্ঠীর দিনই রাজ্য সরকার কলকাতা সহ সংলগ্ন এলাকার মোট ১০৩টি পুজো কমিটিকে সম্মানিত করছে।