নিজস্ব প্রতিনিধি: রবিবারেই কি দলবদল করছেন সাংসদ (MP) অর্জুন সিং? পদ্ম (BJP) বদলে হাতে তুলে নেবেন জোড়াফুল (TMC)? গেরুয়া উর্দি ছেড়ে আবার ধরতে চলেছেন সবুজ পতাকা? জোর জল্পনা শুরু হয়েছে তা নিয়েই। সব বিতর্কের কেন্দ্রে ‘উল্টো সুর’ গায়কের একটি মাত্র ট্যুইট। তা নিয়েই দানা বেঁধেছে রহস্য।
ব্যারাকপুরের সাংসদ ট্যুইট করেছেন, ‘শুনছি আজ সমুদ্র নিজেকে নিয়ে গর্বিত। সেখানে নৌকা নিয়ে যাই চলো যেখানে তুফান এসেছে’। আর এই ট্যুইট রাজনৈতিক দল পরিবর্তনের ইঙ্গিত বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গুঞ্জন, রবিবারেই হাতে তুলে নিচ্ছেন ‘মা- মাটি- মানুষ’ পতাকা।
অর্জুন আগেই বলেছিলেন, রাজনীতিতে চূড়ান্ত বলে কিছু হয় না। তা চলতেই থাকে। এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করেও রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়েছিল। উস্কে দিয়েছিল দল পরিবর্তন বিতর্ক। বারবার অর্জুন সিং বলেছেন, তাঁর পদ আছে। দফতর আছে ঠিকই তবে কাজ করার উপায় নেই। রূপক অর্থে বলেছিলেন, পেন দেওয়া হয়েছে তাঁকে কিন্তু তাতে কালি নেই।
ভাটপাড়া এলাকায় একটি প্রাচীন শিবমন্দির পুনর্নির্মাণ করার কাজ চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। সম্প্রতি ছিল সেই পুনর্নির্মিত মন্দিরের উদ্বোধন। অর্জুন সিংয়ের গড় ভাটপাড়ায় এই মন্দির উদ্বোধনে অংশগ্রহণ করেছিলেন জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। মন্দিরের উদ্বোধনের আগে তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গে কলসযাত্রায় অংশ নেন বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। মন্দিরের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন অর্জুন পুত্র পবন সিং। গঙ্গার ঘাটে পবন সিং ও সোমনাথ শ্যামকে পুজো করতেও দেখা গিয়েছিল। তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গে মন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখে সাধারণ মানুষের মধ্যে শুরু হয় কানাঘুষো। জোরালো হয়ে উঠেছিল অর্জুনের দল বদলের জল্পনা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি ছিল, যে কোনও মুহূর্তে পদ্ম শিবির ছেড়ে জোড়াফুল শিবিরে যোগ দিতে পারেন অর্জুন। যদিও এই বিষয়টিতে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলেই দাবি করেছিলেন বারাকপুরের সাংসদ ও জগদ্দলের বিধায়ক। তবে বারবার অর্জুনের মুখে বারবার শোনা গিয়েছে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (CM) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘেঁষা সুর।
সম্প্রতি জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম সাফ বলেছেন, ‘তৃণমূল কোনও ধর্মশালা নয় যে যখন খুশি এলাম আর যখন খুশি বেড়িয়ে গেলাম। অর্জুন আসতেই পারে। কিন্তু চোখ নামিয়ে মাথা নীচু করে ফিরতে হবে। আর তার জন্য আবেদনও করতে হবে। আগে আবেদন করুক তারপর দেখা যাবে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’ পাশাপাশি অর্জুনকে মুখ খুলেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তাপস রায়ও। তিনি বলেছেন, বিজেপি এখন শাখা প্রশাখায় বিভক্ত। নব্য বিজেপি, আদি বিজেপি, তৎকাল বিজেপি, পরিযায়ী বিজেপি ইত্যাদি ইত্যাদি। এত শত কিছু বুঝি না বোঝার দরকারও আছে বলে আমার মনে হয় না। আবকে বার ২০০ পার বলে যারা বাংলা দখল করতে এসেছিল তাঁরা নিজেরাই এখন একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ছে। রাজনীতি করতে গেলে সবার আগে মানুষের পাশে থাকতে হয়। তাঁদের সুখে দুঃখের সঙ্গী হতে হয়। শুধু জয় শ্রীরাম স্লোগান দিলে হয় না। তৃণমূল থেকে যেই যাক না কেন রাতারাতি আদি কর্মীদের ঘাড়ে, মাথায়, মাচায় কাউকে চাপিয়ে দিলে ক্ষোভ তো একতা হবেই। অর্জুনকে নিয়ে সেই ক্ষোভই এখন মাথাচাড়া দিয়েছে। উনি কী করবেন সেটা উনিই জানেন, বাকিটা দলের বিষয়।’
এরপর অর্জুন সিংয়ের ট্যুইট উস্কে দিয়েছে দল পরিবর্তনের বিতর্ক। তবে কি রবিবারেই ফুল বদল করছেন তিনি?