নিজস্ব প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও: ছেলে হয়ে জন্ম নিলেও ছোটবেলা থেকেই শাড়ি-আলতা-চুড়ির প্রতি ছিল অমোঘ আকর্ষণ। অন্য বন্ধুরা যখন মাঠে ফুটবল-ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত থাকত তখন শাড়ি-চুড়ি পরে ঘুরে বেড়াত ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের থুমনিয়া গ্রামের বাসিন্দা সুবল শীল। বন্ধু-বান্ধব থেকে শুরু করে পাড়া-পড়শিরা তাঁকে ‘হিজড়ে’ বলে কটাক্ষ করে হাসাহাসিও করত। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আচমকাই লিঙ্গ পরিবর্তন করে মেয়ে হয়েছেন সুবল। নাম বদলে হয়েছিলেন মেঘা শর্মা। এক বছর ধরে লিঙ্গ পরিবর্তনের কথা চেপেও রেখেছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। সুবল থুড়ি মেঘাকে দেখতে তাঁর বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন পাড়া-পড়শি থেকে শুরু করে ছোটবেলার বন্ধুরা।
যদিও লিঙ্গ পরিবর্তন নিয়ে মোটেও কুণ্ঠিত নন মেঘা। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘লিঙ্গ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব একটা সহজ ছিল না। সমাজের অধিকাংশ মানুষ মনে করছে আমি এখন বোঝা। পরিচিতরাও অনেক কু-কথা বলেছে। কিন্তু আমি আমার কাজ দিয়ে এ ধারণা বদলাতে চাই। আমার পরিবার আমাকে মেনে নিয়েছে। আমি আমার পরিবার ও সমাজের জন্য কিছু করতে চাই।’ নিজেকে একজন এয়ার হোস্টেস হিসেবে দেখতে চান মেঘা। পাশাপাশি মডেলিং-ও করতে চান। রূপান্তরিত নারীদের আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চান।
ছেলের লিঙ্গ পরিবর্তনের বিষয়টি প্রথমে মেনে নিতে না পারেননি আলো রানী ও জগেশ শীল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সন্তানের নাছোড়বান্দা মনোভাবের কাছে হার মানতে হয়েছে তাঁদের। সংবাদমাধ্যমকে তাঁরা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে সুবলের আচরণ মেয়েদের মতো ছিল। আমরা অনেক চিন্তিত ছিলাম। অনেক চেষ্টা করেও তার মেয়েদের মত আচরণ আমরা পাল্টাতে পারিনি।’