নিজস্ব প্রতিনিধি: তিনি বিদগ্ধ পণ্ডিত, সাহিত্যিক, অনুবাদক। ফার্সি, আরবি, ইংরেজি সহ অন্তত ১৫টি ভাষা গুলে খেয়েছিলেন তিনি। তিনি সৈয়দ মুজতবা আলী (SYED MUJTABA ALI)। সেই তিনিই করেছিলেন বাগদেবীর আরাধনা (SARASWATI PUJA)।
সেদিন ছিল সরস্বতী পুজো। বেলা গড়িয়ে দুপুর হতে যায়। লেখক তখন গঙ্গার ঘাটে। হঠাৎ করে করুণ মুখে এক বৃদ্ধা এলেন নাতনিকে সঙ্গে নিয়ে। ওই টুকুনি মেয়ের মুখ শুকিয়ে গিয়েছে। তাঁরা এগিয়ে এসেছিলেন নদীর ঘাটে লেখককে দেখতে পেয়েই। তবে তাঁকে ‘পুরুত ঠাকুর’ ভেবেছিলেন বৃদ্ধা। তাঁর অনুরোধ ছিল, সরস্বতী পুজো করে দিতে হবে। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছিলেন, এক ব্রাহ্মণের আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। বেলা গড়িয়েছে। উপবাস করে আছে নাতনি। পুষ্পাঞ্জলি দেবে সে। তাই বাধ্য হয়েই অন্য ঠাকুরমশাই খুঁজতে বেরানো। তাঁদের শেষ ভরসা তিনিই (লেখক)।
সরস্বতী পুজোর মন্ত্র উচ্চারণ মুজতবা আলীর কাছে কোনও বিরাট বিষয় নয়। সংস্কৃত ভাষায় তিনি পারদর্শী। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছাত্র, বিশ্বভারতীর পড়ুয়া ধর্ম মানে আগে বুঝতেন, ‘মানবধর্ম’। শিশুকে ক্ষুধার্ত দেখে মায়া হল তাঁর। আশাহত করতে চাননি বৃদ্ধা এবং খুকিকে। তাই বৃদ্ধা এবং নাতনির সঙ্গে তাঁদের বাড়িতে গেলেন লেখক। পুজোর পোশাক পরে বিশুদ্ধ উচ্চারণে মন্ত্রপাঠ করে পদ্ধতি মেনেই বাগদেবীর আরাধনা করেছিলেন লেখক। পরে তিনি বলেছিলেন, বিধর্মীর পুজোয় মা সরস্বতী সন্তুষ্ট হয়েছিলেন কি না, তা তার জানা নেই। বলেছিলেন, উপবাসী ছোট্ট শিশুর কথা ভেবে দেবী নিশ্চয়ই লেখককে ক্ষমা করবেন।