নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: আবারও অশনিসঙ্কেত। করোনাভাইরাসের ডেল্টা প্রজাতির পরে এবার দেশে ওমিক্রনের গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ও গবেষকরা। যদিও এ বিষয়ে এখনও মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের শীর্ষ আধিকারিকরা।
গত ১১ ডিসেম্বর দেশে প্রথম ওমিক্রন আক্রান্তের হদিশ মেলে। জিম্বাবুয়ে ফেরত দুই মহিলা ক্রিকেটারের শরীরে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক প্রজাতি শনাক্ত হয়। তার পর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত মোট ১০ জনের শরীরে ওমিক্রনের সংক্রামণ শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের প্রত্যেকেই রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা এবং সবারই সাম্প্রতিককালে বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে।
শুধু যে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে তাই নয়। দেশে করোনার সংক্রমণেও সিঁদূরে মেঘ দেখা যাচ্ছে। ডেল্টা প্রজাতির বেনজির তাণ্ডব থামার পরে সেপ্টেম্বর থেকে দেশে করোনা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি ঘটেছিল। দৈনিক সংক্রমণের হার এক শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে শনাক্তের হার দুই শতাংশের গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই হার ২ দশমিক ৭৪ শতাংশে উঠেছে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানী অধ্যাপক লিয়াকত আলীর মতে, দেশে ওমিক্রনের গুচ্ছ সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত দেশে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কাজটি সুসংঠিতভাবে করা হচ্ছে না। তাই প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে সংক্রমিত হলেও ঠাণ্ডা-জ্বর মনে করে নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। আরটিপিসিআর পরীক্ষায় যাদের নমুনা পজিটিভ আসছে, তাঁদের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিং করা গেলে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেড়ে যেত।’
আর এক চিকিৎসক মুশতাক হোসেনেরও একই মত। তাঁ কথায়, ‘এতদিন ওমিক্রনের বিক্ষিপ্ত সংক্রমণ ছিল। এখন গুচ্ছ সংক্রমণ হচ্ছে। গুচ্ছ সংক্রমণের পরবর্তী ধাপটিই হচ্ছে কমিউনিটি বা সামাজিক সংক্রমণ। আমাদের সতর্ক হতে হবে। এখন পর্যন্ত যাদের দেহে ওমিক্রন ধরা পড়েছে তাদের সবারই বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে। ১০ জনের শরীরে এই ভাইরাসের ধরন শনাক্ত হয়েছে। এই সংখ্যাটি হয়ত আরও বেশি। কারণ আমরা এখনও আক্রান্ত সবার জিনোম সিকোয়েন্সিং করতে পারছি না। শুরুর দিকে যতজন রোগী শনাক্ত হবে তাদের সবার নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা গেলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।’