নিজস্ব প্রতিনিধি: করোনায় স্বজন হারানো পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে, বুধবার সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই জানাল মোদি সরকার। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র সরকারকে একটি গাইডলাইন তৈরির নির্দেশ দিয়ে জানায় কোভিডে স্বজন হারানো পরিবারদের কোন খাতে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে সেই ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে জানাতে। সেই প্রশ্নের উত্তরেই এদিন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে ক্ষতিপূরণের যাবতীয় দায় দায়িত্বই রাজ্য সরকারের কাঁধে চাপাল কেন্দ্র।
এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে এই ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্য সরকারকেই। এই ব্যাপারে জেলার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের দায়িত্ব দেওয়া হবে বলেও জানা গিয়েছে।
কথায় আছে ভিক্ষার দান, কাড়া না আকাড়া। অর্থাৎ ভিক্ষুকের কখনও পছন্দ করার স্বাধীনতা থাকে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজত্বে দেশের মানুষের অবস্থা অনেকটা ঠিক ভিক্ষুকের মতোই হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের কাছে সরকারের তালে তাল মেলানো ছাড়া কার্যত আর কোনও রাস্তা খোলা নেই। সেই কারণেই জনসাধারণকে তুষ্ট করতে মোদি সরকার যখন যেমন চাল ছড়াবে দেশবাসী সেটা গ্রহণ করতে কার্যত বাধ্য। কারণ সাধারণ মানুষের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও এতদিনে এটা পরিষ্কার যে, বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা যে ভয়াবহ জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে তাতে সরকারের পক্ষ থেকে করা সামান্য থেকে সামান্যতম সাহায্যও দেশবাসী মাথা পেতে নেবে। কিন্তু বুধবার কার্যত সমস্ত নির্লজ্জতার বাঁধ ভেঙে ফেলল কেন্দ্রীয় সরকার। করোনায় স্বজন হারাদের পাশে দাঁড়ানো তো দূর, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দায়িত্বটুকুও রাজ্য সরকারের কাঁধে চাপিয়ে কার্যত সব দায় থেকে হাত ঝেড়ে ফেলল কেন্দ্র।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনীতি প্রথম দিন থেকেই ছিল চোখে পড়ার মতো। করোনা যোদ্ধাদের সম্মান জানিয়ে পুষ্পবৃষ্টির পরে তাঁদেরই জীবনবিমার টাকা বন্ধ করে দেওয়া সবকিছুর জন্যই মোদি সরকার তিরস্কৃত হয়েছে বারংবার। প্রসঙ্গত, এর আগেও একবার করোনায় মৃতদের জন্য ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। সেই সময় মাথাপিছু ৩ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করে মোদি সরকার। কিন্তু এই ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যেই কোনও এক অজ্ঞাত কারণে সেই ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই নিয়ে বিরোধীরা একাধিকবার গলা চড়ালেও কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু দিন কয়েকের মধ্যেই পরিষ্কার হয় এর কারণ। কেন্দ্রীয় সরকার সম্ভবত আগেই আঁচ করতে পেরেছিল যে করোনার মৃত্যুমিছিল এত সহজে রোখা যাবে না। এদিকে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যে এই মুহূর্তে কতটা খারাপ তা কারোর কাছেই অজানা নয়। মূলত সেই কারণেই এর আগে বন্ধ করা হয়েছিল ক্ষতিপূরণ। আর এবার নিজদের দায় এড়াতে সমগ্র বিষয়টিই রাজ্য সরকারের কাঁধে চাপিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচল মোদি সরকার।