নিজস্ব প্রতিনিধি: শাহরুখ-পুত্র আরিয়ান মামলায় সাবেক মাদক বিরোধী কর্মকর্তা সমীর ওয়াংখেড়ে-কে দিন কয়েক আগেই সিবিআই তলব করেছে। সমীর ওয়াংখেড়ে (sameer wankhede), যিনি ২০২১ সালের অক্টোবরে ক্রুজে একটি পার্টি চলাকালীন আরিয়ান খান এবং তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে মাদক খাওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছিলেন। কোনও প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও টানা ২২ দিন জেল হাজতে থাকতে হয় আরিয়ানকে। পরে অবশ্য জামিনে মুক্ত পেলেও তাঁকে ক্লিনচিট দেওয়া হয় ২০২২ সালের মে মাসে। উপযুক্ত প্রমানের অভাবে আরিয়ানকে বেকসুর খালাস করা হয়। তবে সেই মামলা পুনরায় জেগে উঠেছে, কিছুদিন আগেই সাসপেন্ড হয় সমীর ওয়াংখেড়ে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, প্রায় ২৫ কোটি টাকা তিনি শাহরুখ পরিবারের কাছে দাবি করছিলেন এবং হুমকিতে বলছিলেন, ২৫ কোটি না পেলে খানকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেবেন। শেষে জানা যায়, ১৮ কোটি তে শাহরুখ পরিবারের সঙ্গে তাঁর রফা হয়। এই ঘটনা সামনে আসা মাত্রই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছেন সিবিআই। গত কয়েক দিন আগেই তাঁকে তলব করা হয়।
এমনকী তাঁর আয়ের সঙ্গেও তাঁর বিশাল সম্পত্তির কোনও হিসেব মেলেনি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর সূত্র অনুযায়ী, তিনি তার পরিবারের সঙ্গে একাধিকবার বিদেশ ভ্রমণ করেছিলেন। সেন্ট্রাল ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭-২০২১ পর্যন্ত মোট পাঁচ বছরে মিঃ ওয়াংখেড়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে ছয়টি বিদেশ সফর করেছেন। দেশগুলির তালিকায় রয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং মালদ্বীপ। সব মিলিয়ে তাঁর বিদেশ সফর প্রায় ৫৫ দিন। কিন্তু তাঁর দাবি, তাঁর বিদেশ ভ্রমণে খরচ হয়েছে ৮.৭৫ লাখ। যা কিনা সম্পূর্ণ ভুল, শুধুমাত্র বিমানের টিকিটের দাম। এছাড়া প্রতিবেদনে, সমীর ওয়াংখেড়ের দামী ঘড়ির পাশাপাশি অন্যান্য সম্পত্তির খোঁজও মিলেছে, যা হিসেবে অনুযায়ী তাঁর আয়ের সঙ্গে একেবারেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
তাঁর একটি রোলেক্স ঘড়ি রয়েছে, যার দাম প্রায় ১৭ থেকে ২২ লাখ টাকা। এছাড়াও তাঁর মুম্বাইতে চারটি ফ্ল্যাট এবং ওয়াশিমে ৪১,৬৮৮ একর জমি রয়েছে। কিন্তু সিবিআইয়ের কাছে সমীর ওয়াংখেড়ের দাবি, তিনি গোরেগাঁওয়ে তাঁর পঞ্চম ফ্ল্যাটের দাম ৮২.৮ লাখ টাকা, কিন্তু তার সঠিক মুল্য ২.৪৫ কোটি। বিয়ের আগে তিনি এবং তাঁর স্ত্রী ১.২৫ কোটি টাকায় একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। এই অর্থের উৎসের কোনো খোঁজ নেই। আয়কর বিভাগের কাছে মিঃ ওয়াংখেড়ে এবং তাঁর স্ত্রীর বার্ষিক আয়ের ভিত্তিতে তাঁদের বিদেশ ভ্রমণের বা অন্যান্য সম্পত্তির আয়ের উৎস ব্যাখ্যা করেননি। এনসিবি-র ভিজিল্যান্স বিভাগের রিপোর্ট অনুযায়ী, আরিয়ান খান এবং তাঁর বন্ধু আরবাজ মার্চেন্টের নাম এই মামলায় শেষ মুহূর্তে যোগ করা হয় এবং আরও কিছু সন্দেহভাজনের নাম বাদ দেওয়া হয়। অভিযানের সময় একজনের কাছে রোলিং পেপার থাকা সত্ত্বেও, তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সমীর ওয়াংখেড়ে ইচ্ছাকৃতভাবে আপস করেছিলেন।