নিজস্ব প্রতিনিধিঃ একটি খুন ঢাকতে আরও দুটি খুন। নিজেকে মৃত বলে সাজিয়ে ২০ বছর আত্মগোপন করেছিলেন প্রাক্তন নেভি-কর্মী। তবে শেষরক্ষা হলনা। ৬০ বছর বয়সী বলেশ কুমারকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ।
২০০৪ সালে দিল্লির বাওয়ানা এলাকায় একটি খুনের ঘটনায় এক ওয়ান্টেড আসামী ৩০ কিলোমিটার দূরে নজফগড় এলাকায় লুকিয়ে রয়েছে বলে খবর পায় পুলিশ। বলেশ তাঁর নাম পরিবর্তন করে আমান সিং রেখেছিল। ওই এলাকায় সে সম্পত্তির দালাল হিসেবে কাজ করত।
পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে আসে। বলেশ মূলত হরিয়ানার বাসিন্দা। সেখানে ক্লাস ৮ পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। ১৯৮১ সালে নৌবাহিনীতে যোগদান করে এবং ১৯৯৬ সালে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর পরিবহন ব্যবসা শুরু করেন এবং পরিবারের সঙ্গে দিল্লির উত্তম নগরে বাস করেন।
সে পুলিশকে স্বীকার করেছে যে, তিনি এবং তাঁর ভাই সুন্দর লাল ২০০৪ সালে দিল্লির সময়পুর বদলিতে রাজেশ নামে এক ব্যক্তিকে শ্বাসরোধ করেছিলেন। রাজেশের স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। তিনি, তাঁর ভাই সুন্দরলাল ও রাজেশ একসঙ্গে মদ্যপান করছিলেন। সেইসময় বিবাদ বাধতে বলেশ ও তাঁর ভাই উভয়েই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাজেশকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
এই মৃত্যু ঢাকতে তারপরের ঘটনা আরও ভয়াবহ। দিল্লির সময়পুর বদলি থেকে বিহারের মনোজ এবং মুকেশ নামে দুই শ্রমিককে নিয়োগ করেছিলেন। তাঁদের কাজের প্রতিশ্রুতি দেন বলেশ। এরপর দুই শ্রমিক ও বলেশ তাঁর ভাইয়ের একটি ট্রাকে করে রাজস্থানে চলে যায়। যোধপুরে গিয়ে শ্রমিকরা থাকা অবস্থায় ট্রাকটিতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এরপর তাঁরা নিজেদের কাগজপত্র ভিতরে রেখে যান। যাতে পুলিশ ওই দুই মৃতদেহ বলেশ ও তাঁর ভাই সুন্দরলালের মনে করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে একটি মৃতদেহ বলেশ হিসেবে শনাক্ত করে। অন্য মৃতদেহের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
রাজেশ হত্যার মামলায় পুলিশ আদালতে জানায়, সুন্দর লালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বলেশ ট্রাকের আগুনে মারা গিয়েছে। এরপর বলেশের স্ত্রী তাঁর পেনশনের সুবিধা এবং এলআইসির সব সুবিধা পেয়েছেন। পুড়ে যাওয়া ট্রাকের বিমাও পান। তবে শেষরক্ষা হলনা। ২০০৪ সালের মামলায় ২০২৩ সালে গ্রেফতার হলেন বলেশ।