নিজস্ব প্রতিনিধি: জল্পনা ছিলই, গোয়ায় গিয়ে বড়সড় চমক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনদিনের সফরে গোয়ায় গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠাসা কর্মসূচী রয়েছে তাঁর। আজ পানাজিতে প্রথমে জনসভার পর মৎস্যজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। তারপরেই পানাজিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বড় চমক দেন। সকালে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে তৃণমূলে নাম লেখান প্রাক্তন কংগ্রেস নেত্রী, প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া তথা সাঁতারু ও মডেল নাফিসা আলি। আর বড় চমক ছিল পানাজির সাংবাদিক সম্মেলনে, যখন টেনিস তারকা লিয়েন্ডার পেজ যোগ দেন তৃণমূলে।
ভারতের অন্যতম সফল টেনিস খেলোয়াড় লিয়েন্ডার পেজ। অলিম্পিক্সে সিঙ্গলসে ব্রোঞ্জজয়ী লিয়েন্ডার ভারতের অন্যতম সেরা টেনিস তারকা। ডাবলসে আটটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম এবং মিক্সড ডাবলসে ১০টি গ্র্যান্ডস্ল্যাম জেতার কৃতিত্ব রয়েছে তাঁর। ভারতের খেলাধুলোয় সর্বোচ্চ সম্মান খেলরত্ন পেয়েছেন। কেন্দ্র তাঁকে পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, অর্জুন পুরস্কারেও সম্মানিত করেছে। এবার রাজনীতিতে। এদিন তৃণমূলে যোগ দিয়েই লিয়েন্ডার জানান, ‘দিদির সঙ্গে আমার পরিচিত পুরানো। যখন ১৪ বছর বয়সে টেনিস খেলা শুরু করি তখন দেশের ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সবসময় আমাদের উৎসাহ দিতেন। দিদি একজন চ্যাম্পিয়ন।’
লিয়েন্ডারের বর্তমানে গোয়ার বাসিন্দা হলেও তাঁর রয়েছে বঙ্গ যোগ। জানা গিয়েছে, লিয়েন্ডার কলকাতার ছেলে। কলকাতায় জন্মেছেন। পড়াশোনাও করেছেন কলকাতাতেই। এমনকি জন্মসূত্রেও বাংলা যোগ রয়েছে লিয়েন্ডারের। বাংলার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বংশধর লিয়েন্ডার। তাঁর মা জেনিফার পেজ কবির প্রপৌত্রী। লিয়েন্ডারের বাবা ভেস পেজ জন্মসূত্রে গোয়ান। যদিও ভেস কলকাতাতে থেকেছেন বেশি। সেই সূত্রেই কলকাতার লা মার্টিনিয়ারে পড়াশোনা লিয়েন্ডারের। অপরদিকে তৃণমূলে আজ যোগ দিয়েছে নাফিসা আলি। জাতীয় স্তরের সাঁতারু তথা প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া নাফিসা ২০০৪ সালের লোকসভা ভোটে দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে মমতার বিরুদ্ধে লড়ে হেরেছিলেন। এর পর ২০০৯ সালে দল বদলে তিনি উত্তরপ্রদেশের লখনউ কেন্দ্রে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী হন। কিন্তু সেখানেও জিততে পারেননি। এদিন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন সমাজকর্মী মৃণালিনী দেশপ্রভু।
গোয়ায় সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘আমি আপনাদের বোনের মতো। আমি বাংলার মেয়ে, ভারতের মেয়ে। ভারত যদি আমার মাতৃভূমি হয়ে থাকে। তবে বাংলাও আমার মাতৃভূমি, গোয়াও আমার মাতৃভূমি। গোয়ায় নতুন সূর্যোদয় হবে বলেই আমি এসেছি। বিজেপি দাঙ্গা করে ওদের কোনও সংস্কৃতি নেই। তৃণমূল মহিলাদের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে। তৃণমূলই একমাত্র সর্বভারতীয় দল যাদের যাদের সংসদে ৪১ শতাংশ নির্বাচিত মহিলা প্রতিনিধি আছে। গোয়ায় ক্ষমতায় এলে পর্যটন, খনি ও নারীদের ক্ষমতায়নের উপর কাজ করবে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার।’