নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: নির্বাচনী বন্ড নিয়ে ‘রাজনৈতিক প্রভু’দের আড়াল করতে গিয়ে ফের মুখ পুড়ল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার। বন্ড তথ্য প্রকাশে ‘চালাকি’ করায় শুক্রবার ফের দেশের এক নম্বর সরকারি ব্যাঙ্ককে তুলোধনা করল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ। অবিলম্বে স্টেট ব্যাঙ্ককে নির্বাচনী বন্ড নম্বর প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালতে। যাতে সাধারণ মানুষ জানতে পারেন কোন শিল্প সংস্থা কোন রাজনৈতিক দলকে কত টাকা দিয়েছেন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে বাতিল করেছিল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। সেই সঙ্গে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে ৬ মার্চের মধ্যে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ওই তথ্য ১৩ মার্চের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে বলেও জানিয়ে দেন বিচারপতিরা। ওই নির্দেশে বিপাকে পড়ে এসবিআইয়ের কর্তারা। লোকসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক প্রভুদের সঙ্গে দেশের শিল্পপতিদের গোপন যোগাযোগ প্রকাশ্যে যাতে না আসে তার জন্য বন্ড তথ্য প্রকাশের জন্য ৩০ জুন সময় চেয়ে ফের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়। গত সোমবার স্টেট ব্যাঙ্কের ওই আর্জি খারিজ করে মঙ্গলবারের মধ্যেই বন্ড তথ্য তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়. সেই নির্দেশ মেনে নির্বাচন কমিশনের কাছে তথ্য তুলে দেয় এসবিআই। বৃহস্পতিবার সেই তথ্য ওয়েবসাইটে আপলোড করে কমিশন। আর তাতেই শোরগোল পড়ে যায়।
কেননা, ওই তথ্যে নির্বাচনী বন্ডের কোনও নম্বর ছিল না। এমনকি কোন দলকে কোনও শিল্প সংস্থা বা ব্যাক্তি অনুদান দিয়েছে, তাও বোঝার উপায় নেই। অর্থাৎ রাজনৈতিক প্রভুদের বাঁচাতে শীর্ষ আদালতের নির্দেশকে অবমাননা করে চালাকির সঙ্গে তথ্য প্রকাশ করেছে এসবিআই কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বন্ড নিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের আর্জির শুনানিতে স্টেট ব্যাঙ্কের তথ্য প্রকাশ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। ভরা এজলাসে তিনি বলেন, স্টেট ব্যাঙ্কের হয়ে এখানে কে হাজির রয়েছেন? নির্বাচনী বন্ড নম্বর প্রকাশ করা হয়নি।সম্পূর্ণ তথ্য দিতে বলা হয়েছিল, অসম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। কোনও অজুহাত শুনতে চাই না। নির্বাচনী বন্ড নিয়ে সব তথ্য প্রকাশ করতে হবে। কোন বন্ডে কোন দল চাঁদা পেয়েছে, তা জানাতে হবে।’