24ºc, Haze
Thursday, 23rd March, 2023 4:21 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: স্কুলের ইউনিফর্ম থেকে বাথরুম, পাঠ্যসূচী থেকে পরিবেশ, সবই হবে লিঙ্গ নিরপেক্ষ বা Gender Neutral। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার(Modi Government)। দেশের স্কুল শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি দেখে National Council of Educational Research and Training বা NCERT। তাঁরাই চাইছে, পুরুষ-নারীর বাইরেও যে লিঙ্গ হতে পারে, শিক্ষকরা সে শিক্ষাই দিন পড়ুয়াদের। সম্প্রতি তাঁরা একটি প্রস্তাবিত প্রশিক্ষণ মডিউল প্রকাশ করেছে। তাতেই বলা হয়েছে, স্কুলের ইউনিফর্ম হবে লিঙ্গ নিরপেক্ষ। পোশাকে থাকবে না কোনও ছেলে-মেয়ের ফারাক। অ্যানাটমি ক্লাসে মানব শরীর বোঝাতে গিয়ে শিক্ষক শুধু নারী-পুরুষের শরীরেই যেন জোর না দেন। মাথায় যেন থাকে তৃতীয় বা অন্য লিঙ্গের মানুষদের কথাও। সেই সঙ্গে ক্লাসরুমে ‘Boys and Girls’ বলা যাবে না। বরং বলতে হবে ‘Students’। আর এইসবের মূল লক্ষ্য হল তৃতীয় লিঙ্গের পড়ুয়াদের মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করতে চাওয়া। সব মিলিয়ে দেশে লিঙ্গ নিরপেক্ষ স্কুল ব্যবস্থা(Gender Neutral School System) গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়েছে মোদি সরকার।
আরও পড়ুন ভগবতের পথেই মমতা, ইঙ্গিতবাহী বার্তা LGBTQদের জন্য
NCERT ১৪৯ পাতার একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেছে যার নাম দেওয়া হয়েছে Integretting Transgender Concern in Schooling Process। সেখানেই বলা হয়েছে এই প্রস্তাবিত মডিউলের মাধ্যমেই দেশের প্রতিটি স্কুলের শিক্ষক-প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের প্রশিক্ষিত ও সচেতনও করা হবে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সম্পর্কে। একই সঙ্গে গাইডলাইনের শুরুতেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে – স্কুলশিক্ষার অধিকার থেকে যেন দেশের কোনও পড়ুয়া বাদ না পড়ে। ছেলে বা মেয়ে হয়ে জন্মানোর পরেও অন্য লিঙ্গ হিসেবে নিজেকে চিহ্নিত করার অধিকার আছে সকলের। এমন পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে আগে শিক্ষকদের সচেতনতার কাজ করতে হবে। সেই সঙ্গে স্কুলে এমন পোশাক বা ইউনিফর্ম করতে হবে, যা লিঙ্গ-নিরপেক্ষ। স্কুল কর্তৃপক্ষ চাইলে ডিজ়াইনারদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। রূপান্তরকামীদের জন্য স্কুলে আবশ্যিক ভাবে পৃথক শৌচালয়ের ব্যবস্থাও করতে হবে। নানা বয়সের পড়ুয়াদের নানা বিষয় পড়াতে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিজেদের তৃতীয় লিঙ্গ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং পড়ুয়াদেরও ছোটবেলা থেকেই সচেতন করতে হবে। এ ছাড়াও স্কুল কর্তৃপক্ষকে ক্যাম্পাসে ট্রান্সজেন্ডারদের উপস্থিতির হার বাড়াতে বলা হয়েছে ওই গাইডলাইনে। প্রয়োজনে ট্রান্সজেন্ডার কর্মী-শিক্ষক নিয়োগের কথাও বলা হয়েছে তাতে। প্রয়োজনে অন্য লিঙ্গের সফল ব্যক্তিদের স্কুলে এনে আলোচনাসভা, ওয়ার্কশপ আয়োজন করতে হবে।
আরও পড়ুন Same Sex Marriage নিয়ে দ্রুত মত জানান, কেন্দ্রকে সুপ্রিম কোর্ট
শুধু এসবই নয়, এবার থেকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিয়াদের যে দিকে নজর দিতে হবে তা হল, স্কুলের পড়ুয়ারা যেন ছোট থেকেই Gay, Lesbian ও Transgender শব্দের সঙ্গে পরিচিত হয়। তার অর্থগুলো যেন তারা শেখে ও জানে। তবে এইসব কিছু আমাদের মত দেশে কতখানি গ্রহণীয় হবে তা নিয়ে বিতর্ক থাকছেই। বিশেষ করে রক্ষণশীল পরিবারের ও সমাজের মানুষজন এই ব্যবস্থাকে মেনে নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। হয়তো দেখা যাবে স্কুল কর্তৃপক্ষ কেন্দ্র সরকারের নিয়ম মেনে চলতে থাকবে, কিন্তু তাতে বাধা দেবেন অভিভাবকেরা। তাই NCERT যা গাইডলাইনই প্রকাশ করুক না কেন, চট করে যা তা লাগু হবে একথা জোর দিয়ে বলার মতো সময় এখনও আসেনি।