নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার দুর্গাপুজোকে এবছরেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতিকে স্বাগত জানিয়ে কলকাতায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশে নিয়েছে। শোভাযাত্রা হয়েছে বাংলা জুড়ে। স্বাভাবিক ভাবেই এবছর দুর্গাপুজো নিয়ে বাড়তি তাগিদ অনুভব করছেন বিভিন্ন বারোওয়ারি পুজো থেকে বাড়ির পুজো উদ্যোক্তারা। ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির মধ্যেই এবছর প্রথম ঠাকুরনগরে আসছেন প্রয়াত সঙ্গীত সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের বোন ঊষা মঙ্গেশকর এবং তাঁর ভাইপো আদিনাথ মঙ্গেশকর। প্রবাসী বাঙ্গালী হংসপতি বিশ্বাসের ঠাকুরনগরের সুকান্তপল্লীর বাড়ির দুর্গাপুজোয় আসছেন সুর সম্রাজ্ঞীর পরিবারের লোকজন। সপ্তমীর পুজো-সহ সন্ধ্যারতি থেকে অষ্টমীর অঞ্জলি দেবেন তাঁরা। কলকাতা-সহ বাংলার দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে টালিগঞ্জ এবং মুম্বইয়ের চলচিত্র তারকাদের উপস্থিতির রেওয়াজ হামেশাই দেখা যায়। কিন্তু উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলার একেবারে সীমান্ত লাগোয়া ঠাকুরনগরের বিশ্বাস বাড়ির দুর্গাপুজোয় এবছরেই প্রথম আসছেন ঊষা মঙ্গেশকর এবং আদিনাথ মঙ্গেশকর।
ঠাকুরনগরের সুকান্তপল্লীতপই বাড়ি হংসপতি বিশ্বাসের। তিনি বর্তমানে থাকেন লন্ডনের অক্সফোর্ডে। পেশায় তিনি রেস্তোরাঁ ব্যাবসায়ী। গত বাইশ বছর ধরেই সেখানেই আছেন হংসপতি। গত ১৯৯৪ সালে ছেলের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কামনা করেই ঠাকুরনগরের সুকান্তপল্লীর বাড়িতে দুর্গাপুজো চালু করেছিলেন হংসপতির বাবা মহেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।বছর তিন আগে মহেন্দ্রনাথের মৃত্যু হয়। এরপরেই পুজোর ব্যাটন ধরেন হংসপতি। সারা বছর লন্ডনের অক্সফোর্ডে রেস্তোরাঁ ব্যাবসা চালিয়ে পুজোর ঠিক একমাস আগেই পরিবার নিয়ে ঠাকুরনগরে চলে আসেন হংসপতি। লন্ডনে বাঙ্গালী কমিউনিটিতে দুর্গাপুজো হলেও সেই আবেগ থাকে না বলেই দাবি হংসপতির। তার বাংলার দুর্গাপুজোর টানেই প্রতি বছরের মতো শিকড়ে ফিরে এসেছেন তিনি।দুর্গাপুজোর টানেই সুদুর লন্ডন থেকে ঠাকুরনগরে এসেছেন প্রবাসী বাঙ্গালী হংসপাঁতি এবং তার পরিবার। পুজোর কটা দিন এখানে থেকে ফের পাড়ি দেবেন নিজের কর্মস্থল লন্ডনে।
ঠাকুরনগরের সুকান্তপল্লীর বাড়িতেই মহীশুরের একটি মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে বিশ্বাস বাড়ির দুর্গা মন্ডপ। বিশ্বাস বাড়ির পুজো এবছর ২৯ বছরে পড়ল।চতুর্থী থেকেই মাইকে চলছে চন্ডিপাঠ৷ প্রতিমা এখানে সাবেকিয়ানার। বাড়ির পুজো হলেও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এলাকার প্রায় পাঁচশ জন দুঃস্থ মহিলাদের নতুন শাড়ি উপহার দেওয়ার ব্যাবস্থা করেছেন। হংসপতির সঙ্গে প্রয়াত সুর সম্রাজ্ঞীর বোন ঊষা মঙ্গেশকরের পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে।সেই সুত্র ধরেই সপ্তমীর সন্ধ্যায় ঠাকুরনগরের হংসপতির বাড়িতে আসছেন ঊষা মঙ্গেশকর এবং তার ভাইপো আদিনাথ মঙ্গেশকর। মন্ডপেই পুজো থেকে সন্ধ্যারতিতে উপস্থিত থাকবেন তারা।রাত কাটিয়ে অষ্টমীর অঞ্জলিও দেবেন এখানে। সুর সম্রাজ্ঞীর পরিবারের দুই সদস্যের উপস্থিতির খবর চাওড় হতেই উচ্ছসিত গ্রামের মানুষ। নিয়ম মেনে পুজোর আয়োজনের পাশাপাশি বাড়ির দোতলায় পুজোর কটা দিন গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য রয়েছে খাবারের ব্যাবস্থা।
হংসপতি বলেন লন্ডনে থাকলেও দুর্গাপুজোর আবেগ, আনন্দ এবং আত্মিক সম্পর্ক বাংলা ছাড়া কোথাও নেই। সেই আবেগ থেকেই প্রতি বছর ঠাকুরনগরের বাড়িতে আসি৷ ঊষা মঙ্গেশকর শিল্পী হিসেবে নয়,পারিবারিক সম্পর্ক থেকেই আসছেন।
হংস্পতির স্ত্রী রাখি বিশ্বাস বলেন, লন্ডনে বাঙ্গালী কমিউনিটিতে পুজো হয়। কিন্তু এখানে পুজোর যে আবেগ,আনন্দ অনুভব করি সেটা লন্ডনে পাই না। সেই টানেই শ্বশুরবাড়িতে চলে আসি।