নিজস্ব প্রতিনিধি: ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু লোকসভা নির্বাচন। আর মাত্র কয়েকদিন! ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলি জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করেছে। যার যার দলের মধ্যে প্রার্থীতালিকাও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। যেমন, ১০ মার্চ তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে প্রথম থেকেই ছিল একের পর এক চমক। এবার প্রার্থী তালিকার নতুন সংযোজন বাংলার দিদি নং ১-রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিনয়, সঞ্চালনা পেরিয়ে এবার রাজনীতিতে ডেবিউ হল তাঁর। যদিও অনেকদিন ধরেই জল্পনা চলছিল যে, তিনি রাজনীতিতে নামবেন। অবশেষে ১০ মার্চ জল্পনায় শিলমোহর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। হুগলি কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন রচনা বন্দোপাধ্যায়। এদিকে একই কেন্দ্রের বিরোধী দলনেত্রী হলেন প্রাক্তন অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়।
টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে দুজনেই একেবারে প্রতিষ্ঠিত নায়িকা ছিলেন। কিন্তু রাজনীতিতে নামার পর অভিনয়কে বিদায় জানান লকেট। অন্যদিকে অনেক আগেই অভিনয়কে বিদায় জানিয়েছিলেন রচনা। কিন্তু ক্যামেরা থেকে নিজেকে আড়াল করতে পারেননি। গত ১২ বছর ধরে দিদি নং ১-এর সঞ্চালিকা রচনা বন্দোপাধ্যায়। সুতরাং দিদি নং ১-হিসেবে ব্যাপক ক্রেজ তাঁর। তাই হুগলিতে রচনার জেতার সিংহভাগ বেশি। এদিকে রচনার সঙ্গে লকেটের ভাল বন্ধুত্ব হলেও তাঁরা এখন পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বি। ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে প্রচার কার্য শুরু করে দিয়েছেন রচনা এবং লকেট। কিন্তু প্রচারে নেমে বিরোধী দলনেত্রীকে পরতে পরতে হারিয়ে ছক্কা হাঁকাচ্ছেন অভিনেত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী রচনা বন্দোপাধ্যায়। মাকে পুজো দিয়ে গত শনিবার থেকে প্রচারকার্য শুরু করেছেন অভিনেত্রী। আর প্রচারের শুরুতেই তাঁকে দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন এলাকার মানুষ জন। আর তারকা তকমা ছেঁটে ফেলে মানুষের সঙ্গে একেবারে মিশে গেছেন রচনা। তবে লকেটের তুলনায় রচনা রাজনীতিতে আনকোরা হলেও কেউ কাউকে জমি ছাড়তে নারাজ। হুগলি কেন্দ্রে প্রচারে বেরিয়ে ঝড় তুলছেন তৃণমূলের রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বিরোধী প্রার্থীকে দমন করতে রচনার দেখানো পথেই হাঁটছেন লকেট।
এ নিয়ে চতুর্থ দিন নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়েছেন রচনা। মঙ্গলবার দুপুরে বোড়াইচণ্ডী মন্দিরে পুজো দিয়ে পাশের একটি মাজারে চাদর চড়িয়ে প্রচার শুরু করেন রচনা। সঙ্গে দলের ভোজসভায় নিজের হাতে কর্মীদের খাবারও পরিবেশন করেন রচনা বন্দোপাধ্যায়। লাল রঙের শাড়ি, মাথায় রক্ত টিকা, ছোট্ট চুল, গায়ে কাপড় জড়িয়ে প্রচারে নেমে পড়েন রচনা। তাঁকে দেখতে শয়ে শয়ে মানুষের ভিড় জমে। সবার সঙ্গে হাত মেলান তারকা প্রার্থী। সঙ্গে বলেন, ‘‘আমার জীবনে আর কিছু পাওয়ার নেই। এ বার মানুষের জন্য কিছু করতে চাই।’’
এদিন চন্দননগরের বোড়াইচণ্ডীতলা থেকে বেরিয়ে বিন্দুবাসিনী পাড়া হয়ে লক্ষ্মীগঞ্জ বাজার হয়ে বিভিন্ন পাড়ায় প্রচারে যান অভিনেত্রী। এরপরেই একটি লজে নেতাকর্মী দের সঙ্গে ‘একতা ভোজে’ যোগ দেন অভিনেত্রী আর প্রসাদ নিজের হাতে বিতরণ করেন। তাঁর কথায়, তাঁর নাম আছে, খ্যাতি আছে। কিন্তু এবার জীবনের শেষ ১৫-২০ বছর মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। মানুষের প্রতি আস্থা বিশ্বাস আছে। তাই তিনিই জিতবেন বলেই বিশ্বাস। অন্যদিকে, ওই কেন্দ্রে রচনার প্রতিদ্বন্দ্বী লকেটও জনসংযোগে বেরিয়ে রান্না করেন। পোলবা রাজহাট পঞ্চায়েত এলাকায় ভোটের প্রচারে গিয়ে গ্রামের মানুষের সঙ্গে দেখা করেন। কথা বলেন সকলের সঙ্গে। তার পর রাজহাট এলাকায় ওলাবিবিতলায় মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনা করেন লকেট। এই সময়ে এখানে রান্নাপুজো উৎসব হয়। গ্রামের মানুষ রান্না করেন। আর সেই মানুষজনের সঙ্গে রান্নায় হাত লাগান লকেট। কিন্তু দুজনের প্রচার পদ্ধতি ভিন্ন হলেও মানুষের মন জয় করতে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী রচনা।