নিজস্ব প্রতিনিধি: ফের বলিউড শোকবিহ্বল। বছরের শুরু থেকেই বলিউডে একের পর এক শোকছায়া। ৮৩ বছর বয়সে মারা গেলেন বলিউডের প্রবীণ চলচ্চিত্র নির্মাতা কুমার সাহানি (Kumar Shahani)। শুক্রবার কলকাতায় মারা গিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি ছিলেন এফটিআইআই (FTII) পুণের প্রাক্তন ছাত্র। ছয় দশকের কেরিয়ারে কুমার সাহানি একাধিক চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। এমনকী বলিউড লেখক নির্মল ভার্মার ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত তাঁর চলচ্চিত্র ‘মায়া দর্পণ’ হিন্দিতে শ্রেষ্ঠ ফিচার ফিল্মের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিল।
২০২২ সালে ছবিটির সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে অরবিন্দ দাসের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে সাহানি ছবিটির সম্পর্কে বলেছিলেন, “আমি যা করতে চেয়েছিলাম তা হল জনপ্রিয় শিল্পে আমাদের ঐতিহ্যগুলি যেভাবে টিকে আছে তা তুলে ধরা। লোকশিল্পেই সর্বদা মহাকাব্যিক উপাদান থাকে। যখন মায়া দর্পণ তৈরি হয়েছিল, তখন ইউরো-আমেরিকান প্রতিক্রিয়া ছিল খুবই সুন্দর।” মায়া দর্পণ ছাড়াও কুমার সাহানি ১৯৯৭ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত চার অধ্যায়ও পরিচালনা করেছিলেন। চলচ্চিত্রটি ১৯৩০ এবং ১৯৪০ এর দশকের বাঙালি রেনেসাঁর সময় একদল তরুণ বুদ্ধিজীবী এবং বিপ্লবীদের গল্প অবলম্বনে নির্মিত হয়েছিল।এছাড়াও বলিউডের একাধিক সুপারহিট ছবি তাঁর হাতেই তৈরি। যার মধ্যে রয়েছে, ‘মায়া দর্পণ’, ‘খেয়াল গাঁথা’ (১৯৮৯), এবং ‘কসবা’ (১৯৯০), ‘তরঙ্গ’-এর মতো একাধিক ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্র। তাঁর পরিচালিত খেয়াল গাঁথা ছিল ঐতিহাসিক ও আধুনিক কাহিনীর সংমিশ্রণ। যেখানে তিনি একজন ওড়িশি নৃত্যশিল্পীর জীবনী তুলে ধরেছিলেন।
কুমার সাহানি ১৯৪০ সালে পাকিস্তানের লারকানায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৫৮ এবং ১৯৬২ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং ইতিহাসে স্নাতকোত্তর অর্জন করেছিলেন। পরে, তিনি FTII ফিল্ম স্কুলে যোগদান করেন এবং প্যারিসের IDHEC-তে অধ্যয়নের জন্য বৃত্তি পান। তিনি একজন শিক্ষক এবং সিনেমা তাত্ত্বিক হিসাবেও স্বীকৃত অর্জন করেছিলেন। ২০১৫ সালে তুলিকা বুকস দ্বারা প্রকাশিত ‘দ্য শক অফ ডিজায়ার অ্যান্ড আদার এসেস’ শিরোনামে তাঁর রচিত ৫১ টি প্রবন্ধ স্থান পেয়েছিল। তাঁর অনন্য গল্প বলার স্টাইলে মুগ্ধ হয়েছিলেন পাসোলিনি, তারকোভস্কির মতো মহান ব্যক্তিরা। সাহানি পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের প্রিয় ছাত্রদের মধ্যে একজন ছিলেন। তিনি ফিল্ম স্টাডি শেষ করার পরে ফ্রান্সে রবার্ট ব্রেসনকে তার চলচ্চিত্র Une Femme Douce-কেও সহায়তা করেছিলেন।