নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ মহা নায়িকা সুচিত্রা সেনের ৯২ তম জন্মবার্ষিকী। তাঁর মৃত্যু হয়েছে দেখতে দেখতে ১০ বছর পার হয়ে গিয়েছে। চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম নক্ষত্র তিনি। শুধু টলিউড নয়, বাঙালি অভিযাত্রী হিসেবে বলিউডেও পাকাপাকি জায়গা ছিল তাঁর। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির মহা নায়িকা তিনি। উত্তমকুমার এবং সুচিত্রা সেন জুটি আজও প্রতিটি বাঙালির ইমোশন। তাঁদের জায়গা কেউ পূরণ করতে পারবেনা কোনও দিনও। তিনি মূলত ১৯৫০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বাংলা সিনেমায় রাজত্ব করেছেন। যেমন ছিলেন তিনি দেখতে, তেমনি ছিল তাঁর অভিনয়। উত্তমকুমারের সঙ্গে প্রায় শ খানেক চলচ্চিত্রে জুটি বেঁধেছিলেন তিনি।
তাঁকে প্রায়শই গ্রেটা গার্বোর সঙ্গে তুলনা করা হয়, কারণ তিনি হলিউড তারকার মতো, একটি উল্লেখযোগ্য সময়ের পরে লাইমলাইট থেকে সরে গিয়েছিলেনন সুচিত্রা। শুধু বাংলা নয়, তাঁর অভিনীত একাধিক হিন্দি ছবিও বক্সঅফিসে রাজত্ব করেছিল। তবে জানেন কী, তিনি যে মাধ্যমের ভাষাই হোক না কেন, চলচ্চিত্র নির্বাচন করার ব্যাপারে খুব নিখুঁত ছিলেন, পছন্দ না হলে তিনি সেই ছবি করতেন না।
তাঁর কাছে টাকাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। জানা যায় যে, সুচিত্রা সেন কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের একাধিক কাজের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিলেন। ১৯৫৫ সালে তিনি প্রথম দিলীপ কুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধে দেবদাস ছবির মাধ্যমে বলিউডে ডেবিউ করেন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলি ছিল, গুলজারের আঁধি (Sandhu)। যেটি ইন্দিরা গান্ধীর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল।
কিন্তু অনেকেই জানেন না যে, সুচিত্রা সেন একবার বলিউডের আরও একজন কিংবদন্তি পরিচালক রাজ কাপুরের (Raj Kapoor) সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকার করেছিলেন। কারণ রাজ কাপুরের ব্যক্তিত্ব তাঁর পছন্দ ছিল না।
তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, “পুরুষদের মধ্যে, আমি সৌন্দর্যের সন্ধান করি না। আমি বুদ্ধিমত্তা এবং তীক্ষ্ণ কথোপকথনের সন্ধান করি। আমি প্রায় সঙ্গে সঙ্গে রাজ কাপুরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। তিনি একটি প্রধান ভূমিকার প্রস্তাব দিয়ে আমার বাসভবনে এসেছিলেন এবং আমি আমার আসন গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি হঠাৎ আমার পায়ের কাছে বসে পড়েন এবং সেই ছবিতে আমার ভূমিকাটি অফার করার সময় তিনি আমাকে একটি গোলাপের তোড়া দিয়েছিলেন। আমি তৎক্ষণাৎ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছি। তাঁর ব্যক্তিত্ব আমার পছন্দ হয়নি। আমার পায়ের কাছে বসে সে যেভাবে আচরণ করেছে – তা একজন মানুষের জন্য উপযুক্ত নয়।”
সুচিত্রা সেনের আত্মজীবনীতে আরও উল্লেখ রয়েছে যে, তিনি সঞ্জীব কুমারের সঙ্গে একটি দুর্দান্ত বন্ধুত্ব ভাগ করে নিয়েছিলেন, যিনি আন্ধিতে তাঁর সহ-অভিনেতা ছিলেন।