নিজস্ব প্রতিনিধি: অসুস্থ কিংবদন্তী পরিচালক তরুণ মজুমদার (Tarun Majumdar)। জরুরিকালীন পরিষেবার ভিত্তিতে SSKM হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে তাঁকে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জানা গিয়েছে, ৯২ বছর বয়সী এই পরিচালকের কিডনিজনিত সমস্যা রয়েছে। হাসপাতালে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের টিম তৈরি করে তাঁর চিকিৎসা চলছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রবাদপ্রতিম পরিচালকের অসুস্থতার খবর পেয়ে চিন্তায় টলিপাড়া। দ্রুতই তিনি সুস্থ হয়ে উঠুন, তাঁর আরোগ্য কামনায় আমজনতা থেকে টলিপাড়া। ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে তাঁর অবদানের শেষ নেই।
তাঁর পরিচালিত বাংলা চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ‘স্মৃতি টুকু থাক’ (১৯৬০), কাচের স্বর্গ (১৯৬২), পলাতক (১৯৬৩), নিমন্ত্রণ (১৯৭১), সংসার সীমান্তে (১৯৭৫), গণদেবতা (১৯৭৮) ছবিগুলিও প্রভূত প্রশংসা পেয়েছে। এছাড়াও বালিকা বধূ (১৯৬৭), কুহেলি (১৯৭১), শ্রীমান পৃথ্বীরাজ (১৯৭৩), ফুলেশ্বরী (১৯৭৪), দাদার কীর্তি (১৯৮০), ভালোবাসা ভালোবাসা (১৯৮৫), আপন আমার আপন (১৯৯০), পরশমণি (১৯৮৮), মেঘমুক্তি (১৯৮২), খেলার পুতুল (১৯৮২), আমার গীতি (১৯৮৪) একাধিক ব্লকবাস্টার ছবিও। তাঁর রচিত দাদার কীর্তি সিনেমাটি এই সময়ের একটি মাইলফলক সৃষ্টিকারী চলচ্চিত্র। আর এই ছবির মাধ্যমেই টলিউডে ডেবিউ করেছিলেন দেবশ্রী রায় এবং তাপস পাল। বাংলা পেয়েছে নতুন হিরো-হিরোইনকে।
বাংলার স্বর্ণযুগের একজন হিরে তরুণ মজুমদার। তবে ১৯৫৯ সালে উত্তম কুমার এবং সুচিত্রা সেনের সঙ্গে তিনি ‘চাওয়া পাওয়া’ ছবিতে অভিনয়ও করেছিলেন। আর এই চলচ্চিত্র নির্মাতার ঝুলিতে রয়েছে, চারটি জাতীয় পুরস্কার, সাতটি BFGA এবং পাঁচটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার। এছাড়াও ১৯৯০ সালে তিনি ভারত সরকারের দ্বারা পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর হাত ধরেই বাংলা চলচ্চিত্রের একেকজন নতুন নতুন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন। যে তালিকায় রয়েছেন, তাপস পাল, মহুয়া রায়চৌধুরী, অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের মতো একেকটি তাবড় তাবড় তারকারা। তাঁর পরিচালিত ‘আপন আমার আপন ছবিতে’ অভিনয় করেছিলেন শতাব্দী রায় এবং তাপশ পাল। যা ব্লকবাস্টার হিট হয়েছিল।
তাঁর শেষ ব্লকবাস্টার ছবি হল, কোয়েল, ঋতুপর্ণা অভিনীত ‘চাঁদের বাড়ি’। একসময়, শোনা যায়, স্কুলে পড়াশোনাকালীন অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়কে রাস্তায় দেখেই পছন্দ করে নিয়েছিলেন তিনি, এবং প্রথম ব্রেক দিয়ে দেন তাঁকে ছবিতে। তবে অনেকদিন ছবির জগত থেকে লকডাউনের সময় বই এবং চিত্রনাট্য লেখা শুরু করেছিলেন এই প্রবাদপ্রতিম পরিচালক। আর ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি তাঁর রচিত Cinemapara Diye বইটি প্রকাশিত হয়।