নিজস্ব প্রতিনিধি, দোহা: জীবনের শেষ বিশ্বকাপে স্বপ্ন ভেঙে খানখান হয়ে গেল বিশ্বের সেরা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। শনিবার রাতে আল থুমামা স্টেডিয়ামে শেষ চারে ওঠার লড়াইয়ে পর্তুগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল আফ্রিকার অদম্য সিংহ হিসেবে পরিচিত মরক্কো। আফ্রিকার কোনও দেশ এবারেই প্রথম বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠল। প্রথমার্ধের ৪২ মিনিটে জয়সূচক গোল করেন মরক্কোর ইউসুফ এন নেসেরি।
অথচ এদিন শেষ চারে যাওয়ার লড়াইতে বল দখলের লড়াই থেকে গোল লক্ষ্য করে শট নেওয়া সব কিছুতে্ই প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল পর্তুগাল। গোটা ম্যাচে ৭৪ শতাংশ বলের দখল ছিল রামোস-পেপেদের। এমনকী নিজেদের মধ্যে ৬৬৩টি পাস খেলেছেন। কিন্তু তিন কাঠিতে বল রাখতে পারেননি। বেশ কয়েকবার কাউন্টার অ্যাটাকে পর্তুগালের রক্ষণভাগকে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিলেন মরক্কোর আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়রা। ইউসুফ এন নেসেরির দুঋই হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। প্রথমার্ধের শেষ লগ্নে ৪২ মিনিটের মাথায় বাঁ প্রান্ত থেকে আতিয়াত-আল্লাহ’র দুর্দান্ত ক্রস লাফ দিয়ে উঠে ধরতে চেয়েছিলেন পর্তুগিজ গোলরক্ষক দিয়েগো কস্তা। কিন্তু তার আগেই দৌড়ে এসে হেড করে পর্তুগালের জালে বল জড়িয়ে দেন সেভিয়া স্ট্রাইকার ইউসুফ এন-নেসিরি। তিন মিনিট বাদে ৪৫ মিনিটের মাথায় দালতের ফ্লিক থেকে বল পেয়ে ব্রুনো ফার্নান্দেজ ডান প্রান্ত থেকে অসাধারণ এক শট নিয়েছিলেন। কিন্তু গোলপোস্টের উপরের বারে লেগে বল ফিরে আসে।
প্রথমার্ধে এক গোলে পিছিয়ে থাকায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ায় পর্তুগিজরা। এদিনও সাইড বেঞ্চে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে বসিয়ে রেখেছিলেন ‘গোঁয়ার’ পর্তুগিজ কোচ। শেষ পর্যন্ত ৫১ মিনিটের সময় পরিবর্ত খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামান। তিনি চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মরক্কোর দুর্ভেদ্য রক্ষণকে হারিয়ে দলকে সমতায় ফেরাতে পারেননি। ৫৮ মিনিটে গঞ্জালো রামোসের হেড পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৬৪ মিনিটে ডি–বক্সের বাইরে থেকে ফার্নান্দেজের শট যায় পোস্টের উপর দিয়ে। ৬৮ মিনিটে ফার্নান্দেজের ক্রসে রোনাল্ডো ঠিকভাবে মাথা ছোঁয়ালে হয়ত বদলে যেতে পারত ম্যাচের মোড়। ৮৩ মিনিটে রোনাল্ডোর নামিয়ে দেওয়া বলে জোরালো শট নিয়েছিলেন ফেলিক্স। কিন্তু মরক্কোর গোলরক্ষক বুনোকে পরাস্ত করতে পারেননি। ইনজুরি টাইমে পর পর দুই বার ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন মরক্কোর ওয়ালিদ শেদিরা। কিন্তু শেষে্বর ছয় মিনিটে দশ জনের মরক্কোর জালে বল গলাতে পারেনি পর্তুগিজরা।