আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এক দশক আগে কলম্বোর ওয়েইলকাড়া সংশোধনাগারে মোবাইল বাজেয়াপ্ত অভিযানকে ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ডে প্রাণ গিয়েছিল ২৭ বন্দির। অভিযোগ উঠেছিল, মোবাইল বাজেয়াপ্তের নামে গণহত্যা সংগঠিত করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার কলম্বো হাইকোর্টের তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ দেশের কারা প্রধান (কারা কমিশনার) এমিল লামাহেওয়াগেকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। যদিও গণহত্যায় অন্যতম অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিক মোসেস রানাগাজেওয়াকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। দ্বীপরাষ্ট্রটিতে এই প্রথম শীর্ষ পুলিশ আধিকারিককে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হলো।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘আল-জাজিরা’ জানিয়েছে, ২০১২ সালের ৯ নভেম্বর কলম্বোর কাছে ওয়েইলকাড়া সংশোধনাগারে বিশেষ অভিযান চালায় পুলিশের টাস্ক ফোর্স। বন্দিদের কাছ থেকে অবৈধ মোবাইল ফোন উদ্ধার করার লক্ষ্য নিয়েই ওই অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময়ে পুলিশ ও কারারক্ষীদের সঙ্গে বন্দিদের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রাণঘাতী সংঘর্ষে ২৭ বন্দি মারা যায়। গুরুতর আহত হয় আরও ২০ জন। সংঘর্ষের পরেই অভিযোগ ওঠে, পরিকল্পিতভাবেই কারাগারের অন্দরে গণহত্যা সংগঠিত হয়েছে। ওই গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিলেন মানবাধিকার কর্মীরা। এমনকী ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের পরে শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। চাপে পড়ে ২০১৯ সালে জুলাইয়ে কারা কমিশনার এমিল লামাহেওয়াগে ও পুলিশ আধিকারিক মোসেস রানাগাজেওয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
কলম্বো হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে সরকারি আইনজীবী জানান, ‘ঘটনার দিন খুব কাছ থেকে আট বন্দিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। বাকিরাও গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের পর অস্ত্রগুলি এমনভাবে সাজিয়ে রাখা হয়, যাতে প্রাথমিকভাবে মনে হবে, বন্দিরাই কারা রক্ষীদের কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নিয়ে গুলি চালিয়েছিল।’ ওইদিন কে বন্দিদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর আদেশ দিয়েছিল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।