সুদীপ্ত ভট্টাচার্য: মাত্র একটা ম্যাচেই আজকে হিরো বানিয়ে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের অচেনা-অখ্যাত এক ক্রিকেটারের ভাগ্যকে। সেই ক্রিকেটারটি হলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের খেলোয়াড় রিঙ্কু সিং। গত ৯ তারিখ আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে চলতি আইপিএল-এ গুজরাটের বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে রিঙ্কুর ব্যাট থেকেই এসেছিল এক ওভারে পাঁচটি ছক্কা। যার জেরেই রশিদ খানদের হারতে হয়েছিল। সেই রিঙ্কুর সাফল্যেই এখন গর্বিত বাবা খানচন্দ্র সিং ও কোচ মাসুদ জাফর আমিনি।
উত্তরপ্রদেশের আলিগড়। মুসিলমদের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যই আলিগড়ের খ্যাতি সারা বিশ্বজুড়ে। সেই আলিগড়ের এক বাসিন্দা খানচন্দ্র সিং। তাঁর পেশা বাড়ি বাড়ি গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়া। সেই খানচন্দ্র সিং-এর ছেলে রিঙ্কু সিং। আর্থিক অনটনের মধ্যেও ছেলে রিঙ্কু যে এইভাবে ক্রিকেটকে ভালোবেসে সাফল্য পেয়েছে এটা ভেবেই এখন আল্পুত খানচন্দ্র। টেলিফোনে যখন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে রিঙ্কুর কথা জিজ্ঞেস করতেই খানচন্দ্র সিং উত্তর দেন, রিঙ্কু আজ যা করেছে বাবা হিসেবে আমি গর্বিত শুধু আলিগড় নয়, গর্বিত গোটা দেশবাসীর কাছে।
ছোটো থেকে আর্থিক অনটন ছিল সিং পরিবারের নিত্য সঙ্গী। তার সঙ্গে লড়াই করেই ক্রিকেটকে ভালোবেসে ছেলের এই উত্থান, কি বলবেন আপনি। প্রশ্নটা শুনেই কিছুটা থমকে খানচন্দ্র সিং উত্তর দেন, দেখুন আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না এটা ঠিক কথাই। তারমধ্যেও বাবা হিসেবে ছেলে যে লড়াই করে বড় হয়েছে, সেটার জন্য পুরো কৃতিত্বের দাবিদার রিঙ্কু নিজেই। আমি চাই রিঙ্কু এখানেই যেন থেমে না থাকে। আরও আরও ভালো খেলুক। নিজের চোখে ছেলের এই সাফল্য আমি দেখে যেতে চাই। তখন আমার চেয়ে খুশি আর কেউ হবে না। রিঙ্কু আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। এখন আমার যে কি আনন্দ হচ্ছে ওঁকে নিয়ে তা ভাষায় কি করে বোঝাই বলুন।
আরও জানতে পড়ুন: চাকরি গেল কোর্টনি ওয়ালসেরhttps://www.eimuhurte.com/sports/kortney-walsh-removed/
শুধু কি বাবা, রিঙ্কুর সাফল্যে একইরকম খুশি তাঁর কোচ মাসুদ জাফর আমিনিও। পবিত্র রমজান মাস চলছে। তাই সত ব্যস্ততার মধ্যেও তাঁকে ফোনে পাওয়া গেল তখনও সে ব্যস্ত ছিলেন। তবুও সময় দিলেন প্রিয় ছাত্রের বিষয়ে কিছু বলবার জন্য।
রিঙ্কুর প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করতেই, মাসুদ ভাইয়ের একটাই কথা আজ ও সাফল্য পেয়েছে এর কৃতিত্বের দাবিদার রিঙ্কু নিজেই। রিঙ্কুকে আমি প্রথম দেখি আলিগড়ে এক স্কুল টুর্নামেন্টে। সেখানে ৩২ বলে ৫০ রান করে অপরাজিত ছিল ও। সেদিন রিঙ্কুর ব্যাটিং স্টাইল দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম একটু তালিম দিতে পারলেই এই ছেলেটি একদিন হিরো হবে আমাদের দেশের।
আজ ও সেটাই করে দেখাল। সামনেই বিশ্বকাপ। আমি চাই রিঙ্কু জাতীয় দলের জার্সিতে রিঙ্কু বিশ্বকাপের মঞ্চে খেলুক। আর এইভাবে দেশকে জিতিয়ে আনুক ম্যাচে। সেইদিন আমিও আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠব। কেননা রিঙ্কু তো আমারই হাতে গড়া।