নিজস্ব প্রতিনিধি: যারা নিত্যদিন দ্বিতীয় হুগলি সেতু বা বিদ্যাসাগর সেতু(Vidyasagar Setu) দিয়ে যাতায়াত করেন তাঁদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। পুজোর আগে না হলেও পুজোর ঠিক পরে পরেই এই সেতুতে ৮ মাস থেকে ১ বছরের জন্য যান নিয়ন্ত্রণের পথে হাঁটা দিতে চলেছে রাজ্য সরকার(West Bengal State Government)। কালিপুজো – ভাইফোঁটার পরেই সেই যান নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু হবে। নবান্ন(Nabanna) সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশের বৃহত্তম এই কেবল স্টেড ব্রিজের সংস্কারের কাজ পুজোর পরেই শুরু করে দেওয়া হবে। সেতু। বহু ব্যবহারে এই সেতুর পরিস্থিতি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে, অবিলম্বে কাজে হাত না দিলে তা বিপজ্জনক হয়ে পড়বে। সেতু সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ রেখেই এই কাজ করা উচিত। কিন্তু বাস্তবে সেটা সম্ভব নয়। তাই যান নিয়ন্ত্রণের(Restrictions of Transport Movement) পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য সরকার।
১৯৯২ সালে চালু হওয়া ৮২৩ মিটার দৈর্ঘ্যের বিদ্যাসাগর সেতু ঝুলে রয়েছে ১৫২টি কেবলের(Cable) মাধ্যমে। প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী, এর মধ্যে প্রায় ১৪টি কেবলের স্বাস্থ্য খুব খারাপ। বাকিগুলিও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ফলে বদলানোর প্রয়োজন রয়েছে এমন কেবলের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এক একটি দিকের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে প্রায় চার মাস। সেই হিসাবে সেতুর কাজ পুরো শেষ হতে ৮ মাস থেকে ১ বছর সময় লেগে যেতে পারে। এই ১ বছর সময়সীমাকে হাতে রেখেই কাজ শুরু করা হবে এবং ওই সময় সেতুতে কঠোরভাবে যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কাজ চলাকালীন সেতু দিয়ে যান চলাচল বিপজ্জনক। তাই নিরুপদ্রবে কাজ শেষ করতে গেলে বিদ্যাসাগর সেতু দীর্ঘ সময় বন্ধ রাখার কথাই বলেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সেটা করতে গেলে হাওড়া ও কলকাতা দুই দিকেই ভয়াবহ যানজট তৈরি হয়ে যাবে যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। তাই ঠিক হয়েছে, যান শাসন করা হবে।
বিদ্যাসাগর সেতু মোট ছয় লেনের সেতু। দুই দিকেই ৩টি করে লেন দিয়ে যানবাহণ চলাচল করে। তাই ঠিক করা হয়েছে, যেদিকে কাজ হবে, সেই দিকের দু’টি লেন বন্ধ রেখে একটি খোলা রাখা হবে। এই ১টি লেন দিয়ে যে দিকে গাড়ি যাবে সেই দিকের গাড়ি যাতায়াতের জন্য অন্য দিকের তিনটির মধ্যে একটি লেনও খুলে দেওয়া হবে। উল্টো দিকে কাজ চলাকালীনও একই ভাবে গাড়ি পাস করানো হবে। একই সঙ্গে ঠিক করা হয়েছে, লোকাল রুটের বাস এবং ছোট ২ ও ৪ চাকার গাড়ি ছাড়া আর কোনও গাড়িই এই সেতু দিয়ে ওই সময় যাতায়াত করতে দেওয়া হবে না। যাবতীয় দূরপাল্লার বাস, পণ্যবাহী লরি, ম্যাটাডোর নিবেদিতে সেতু দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। সেই হিসাব মাথায় রেখে হাওড়া ও কলকাতা দুই দিকেই টড়াফিক ব্যবস্থা সাজিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের খুব একটা বেশি অসুবিধা হবে না।