নিজস্ব প্রতিনিধি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) বাংলার(Bengal) মুকুটে জুড়ে গেল সাফল্যের আরও একটি পালক। দেশের মধ্যে স্বল্প সঞ্চয়ের(Small Savings) প্রকল্পে প্রথম হয়েছে বাংলা। ডাকঘরে(Post Office) একাধিক স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি টাকা জমা পড়েছে এই বাংলা থেকেই। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ডাকঘরের স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে টাকা জমানোর নিরিখে মহারাষ্ট্রকে পিছনে ফেলে শীর্ষে উঠে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য। ওই বছর বাংলা থেকে প্রায় ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা জমা পড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে যে রিপোর্ট সম্প্রতি পেশ করেছে India Post, তাতেই উঠে এসেছে এই তথ্য। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বাংলা থেকে এত বিপুল পরিমাণ টাকা এর আগে কখনও কেন্দ্রের সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে জমা পড়েনি। এটা সর্বকালীন রেকর্ড। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র। ২০২১-২২ আর্থিক বছরে ওই রাজ্যের বাসিন্দারা বিভিন্ন স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে মোট প্রায় ১ লক্ষ ২৪ হাজার কোটি টাকা জমা করেছেন। তৃতীয় স্থানে আছে উত্তরপ্রদেশ। যোগীরাজ্য থেকে সঞ্চয়ের পরিমাণ ১ লক্ষ ৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন কলকাতার লিজ জমির মালিকানাস্বত্ত্ব দিচ্ছে মমতার সরকার
জানা গিয়েছে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে বাংলায় ডাকঘর সঞ্চয় প্রকল্পগুলি থেকে প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা জমা পড়েছিল। তার আগের তিন বছরে এই খাতে জমা পড়েছিল যথাক্রমে ১ লক্ষ ৪ হাজার, ৮৩ হাজার এবং ৭৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ আর্থিক বছরে যে পরিমাণ টাকা বাংলা থেকে জমা পড়েছে, তা আগে কোনও রাজ্যে হয়নি বলে জানাচ্ছেন ডাক-কর্তারা। আরও জানা গিয়েছে, স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির মধ্যে বাংলায় সবচেয়ে জনপ্রিয় হল মেয়াদি আমানত বা Term Deposit। এই Scheme-এ জমা পড়েছে ৫৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকারও বেশি। সবচেয়ে কম টাকা জমা পড়েছে সুকন্যা সমৃদ্ধি অ্যাকাউন্টে, ৩ হাজার ২২৩ কোটি টাকা। ওই অর্থবর্ষে গোটা দেশে স্বল্প সঞ্চয় খাতে মোট ১১ লক্ষ ২৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা জমা পড়েছে। কিন্তু বাংলাই কেন উঠে এল স্বল্প সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে? সেই কারণ খুঁজতে গিয়ে উঠে এসেছে সেই মমতার চালু করা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। বাংলার মহিলারা প্রতি মাসে ৫০০ বা ১০০০ টাকা করে যাই পাচ্ছেন, দেখা যাচ্ছে তাঁর একটা অংশ তাঁরা ডাকঘরে জমাচ্ছেন। কারণ তাঁরা জানেন এই টাক হুট করে বন্ধ হয়ে যাবে না। তাই তাঁরা ঝুঁকি নিয়েছেন প্রতি মাসে ডাকঘরে টাকা জমানোর।
আরও পড়ুন গ্রামের মানুষেরাও Online-এ দিতে পারবেন Property Tax
এর পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদির জমানায় দেশের অর্থনীতি, বাজার অর্থনীতি খুবই অস্থির হয়ে উঠেছে। শেয়ার বাজারও কখনও হু হু করে চড়ছে আবার কখনও হু হু করে নেমে যাচ্ছে। ব্যাঙ্কগুলিও বিশাল কিছু সুদ দিচ্ছে না। তাই অনেকেই ডাকঘরের স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলিকে বেছে নিচ্ছেন সঞ্চয়ের জন্য। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের শেষ দিক থেকে স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার ধাপে ধাপে অনেকটা বেড়েছে। সেক্ষেত্রে পরবর্তী আর্থিক রিপোর্টগুলিতে বাংলার সাফল্য আরও উজ্জ্বল হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। একই সঙ্গে তাঁরা এটাও জানিয়েছেন, গ্রাম বাংলায় ডাকঘরের স্বল্প সঞ্চয়ে বেশি টাকা জমা পড়ার পিছনে শুধু যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার কাজ করেছে তাই নয়, মমতার আমলে রাজ্যে লক্ষাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠী হয়েছে যার মাধ্যমে গ্রাম বাংলার অনেক মহিলা স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাঁরাও ভবিষ্যতের কথা ভেবে ডাকঘরের স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পের মাধ্যমে টাকা জমাচ্ছেন।