নিজস্ব প্রতিনিধি: এক দশক আগে ২০১২ সালে পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক(Primary School Teacher) পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছিল। ২০১৬ সালে এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে(West Bengal State Education Department) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court)। কিন্তু আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও শিক্ষা দফতর বিগত ৭ বছরেও সেই তদন্তের কাজ করেনি বলে অভিযোগ ওঠে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়(Justice Abhijeet Gangopadhay) নির্দেশ দিয়েছেন, রাজ্য শিক্ষা দফতরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে সেই টাকা কলকাতা হাইকোর্টের ‘লিগ্যাল এড সার্ভিস’-এ জমা দিতে হবে। শুধু তাই নয়, রাজ্যের শিক্ষা দফতর কোথা থেকে ওই জরিমানার টাকা জোগাড় করবে সেটাও বাতলে দিয়েছেন বিচারপতি। তিনি জানিয়েছেন, ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ‘দুর্নীতি’র তদন্তে যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাঁদের কাছ থেকেই ওই জরিমানার টাকা আদায় করতে হবে।
আরও পড়ুন ভোটের টাকা পাচ্ছেন না বিজেপির প্রার্থীরা, ক্ষোভ তুঙ্গে
রাজ্যে তখন সবে সবে পরিবর্তন ঘটেছে। সালটা ২০১২। সেই সময়েই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় কারচুপির অভিযোগ ওঠে। স্বজনপোষণের মাধ্যমে কয়েক জন প্রার্থী চাকরি পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে দায়ের হয় মামলাও। আদালত ২০১৬ সালে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। কিন্তু গত ৭ বছরেও সেই তদন্ত শুরুই হয়নি। আর তার জেরে নতুন করে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। মামলাকারীর আইনজীবী তাঁদের আবেদনে জানিয়েছিলেন, ২০১২ সালে পূর্ব মেদিনীপুরে যারা স্বজনপোষনের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন, তাদের নিয়োগ বাতিল করা হোক। একই সঙ্গে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আদালত যাতে তদন্তের নির্দেশ দেয়, সেই আবেদনও জানানো হয়।
আরও পড়ুন গোঘাটে বিষ দিয়ে তৃণমূল কর্মীর বীজতলা নষ্ট, কাঠগড়ায় বিজেপি
মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই জরিমানার পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বা শিক্ষা সচিবকে জমা দিতে হবে তদন্তের রিপোর্ট। হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির যদি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা না থাকে, তবে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১২ সেপ্টেম্বর। এদিন শুনানিতে রাজ্যের শিক্ষা সচিবের উদ্দেশে তীব্র ভর্ৎসনা করে আদালত।