নিজস্ব প্রতিনিধি: সকাল ৯টায় যে অভিযান শুরু হয়েছিল, সেটাই শেষ হয়েছে দুপুর ২টো ১৫ নাগাদ। অর্থাৎ প্রায় ৫ ঘন্টা ধরে চলেছে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু সেই অভিযানে লাভ কী হল? হাতে এল কয়েকজনের Biodata মাত্র। তদন্তের স্বার্থে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কাউন্সিলরের Bank Statement ও Mobile। এই ঘটনা সামনে আসতেই এবার বাংলার শাসক দলের নিশানায় পড়ে গেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI। শাসক শিবিরের দাবি, এই ঘটনা পরিষ্কার বলে দিচ্ছে দলের জনপ্রতিনিধিদের হেনস্থা ও হয়রানি করতে এবং সামাজিক ভাবে তাঁদের মানসম্মানে ধাক্কা দিতেই এই অভিযান চালানো হচ্ছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার(School Teachers Recruitment Scam) তদন্তে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ কলকাতা পুরনিগমের(KMC) ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর(TMC Councilor) তথা পুরনিগমে তৃণমূলের মুখ্যসচেতক বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তের(Bappaditya Dasgupta) পাটুলির বাড়িতে হানা দেয় CBI। প্রায় সওয়া ৫ ঘণ্টা পর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের ওই দলটি বেড়িয়ে যায় বাপ্পাদিত্যের বাড়ি থেকে। সিবিআই বেরিয়ে যাওয়ার পরেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন বাপ্পাদিত্য। তিনি জানান, দু’টি ব্যাঙ্কের স্টেটমেন্ট, একটি মোবাইল ফোন এবং কয়েক জনের বায়োডেটা নিয়ে গিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। আর তারপরেই প্রশ্ন উঠেছে, কিছুই যখন পাওয়া গেল না, তখন মিছিমিছি হানাদারি কেন? কোন খবরের সূত্র ধরেই বা হানাদারি? নাকি নির্দিষ্ট কারও অঙ্গুলিহেলনে এই হানাদারির ঘটনা? নাম না করেই এই বিষয়ে শাসক শিবিরের অভিযোগের আঙুল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দিকেই।
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এদিন বাপ্পাদিত্য জানান, তাঁর আয়কর রিটার্ন দেখতে চেয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। তবে তা নিয়ে যাননি তাঁরা। মোবাইল ছাড়া অন্য কোনও ডিভাইসও নেওয়া হয়নি বলে দাবি তাঁর। বাপ্পাদিত্যের সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী, বর্তমানে জেলবন্দি তৃণমূল বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠতার কথা স্থানীয়েরা জানেন। বাপ্পাদিত্য জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা তাঁকে পার্থ সংক্রান্ত ব্যক্তিগত প্রশ্ন করেছেন। কবে থেকে পার্থের সঙ্গে পরিচয় ইত্যাদি বিষয় জানতে চেয়েছেন।
পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা বা ওই সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁকে গোয়েন্দারা প্রশ্ন করা হয়েছে কি না জানতে চাওয়ায় বাপ্পা স্পষ্ট বলেন, ‘ওই সব দিকেই যাননি সিবিআই অফিসারেরা। সিবিআই আধিকারিকদের শরীরী ভাষা দেখে মনে হয়েছে, ওঁরা আমার ভূমিকায় সন্তুষ্ট। ওঁরা আমায় বলেছেন, তদন্তের স্বার্থে আমার সহযোগিতা প্রয়োজন হতে পারে। আমি জানিয়েছি, সব সময় আমি তদন্তে সহযোগিতা করব।’ বাপ্পা এটাও জানিয়েছে যে, তাঁর বাড়ি থেকে যাদের বায়োডেটা নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁরা কলকাতা পুরনিগমের বিভিন্ন বিভাগে চুক্তিভিত্তিক কর্মী। বলেছেন, ‘বেশ কয়েক জন এইট পাশ ব্যক্তির বায়োডেটা ছিল। যেমন কাউন্সিলরদের কাছে থাকে। পুরনিগমের স্বাস্থ্য বিভাগ-সহ বিভিন্ন বিভাগে চুক্তিভিত্তিক লোক নিয়োগ হয়। কাউন্সিলরেরা করে থাকেন। তেমনই কয়েকটি বায়োডেটা ওঁরা নিয়ে গিয়েছেন।’