নিজস্ব প্রতিনিধি: শহরে সম্পত্তিকর(Property Tax) আদায়ে কলকাতা পুরনিগম(KMC) রীতিমত নজির গড়ে ফেলেছে। ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে কলকাতা পুরনিগম কর্তৃপক্ষ ১১২০ কোটি টাকা সম্পত্তিকর আদায় করেছিল। ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে সেই সম্পত্তিকর বাবদ কলকাতা পুরনিগমের আয় হয়েছে ১২১০ কোটি টাকা। পুরনিগমের অর্থ বিভাগের আধিকারিকদের দাবি, সম্পত্তিকর আদায়ে কলকাতা পুরনিগম নজির তৈরি করলেও ঘাটতির বোঝা থেকেই যাচ্ছে। আয়ের থেকে ব্যয়ের পরিমাণ বেশি হওয়াটাই এর মূল কারণ। একই সঙ্গে এটাও সামনে এসেছে যে, পুরনিগমের বিভিন্ন বিভাগের অধীনে কাজ করা ঠিকাদারদের বকেয়া প্রাপ্য বর্তমানে ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে অবসর নেওয়া পুরকর্মীরা অবসরকালীন থোক টাকা এখনও পাননি। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, পুরনিগম ধীরে ধীরে সমস্ত বকেয়া পরিশোধ করে দেবে।
উল্লেখ্য, রাজ্যের প্রায় সব পুরসভা ও পুরনিগমেরই আয়ের সিংহভাগই আসে সম্পত্তিকর থেকে। কলকাতা পুরনিগমও সেখানে ব্যতিক্রম নয়। এখনও কলকাতা পুরনিগমের আয়ের একটা বড় অংশই আসে এই সম্পত্তিকর থেকে। এই অবস্থায় পুরনিগমের আয় বাড়াতে আরও বেশি পরিমাণে সম্পত্তিকর আদায়ে জোর দিয়েছে পুরপ্রশাসন। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে, কলকাতা শহরের একাধিক এলাকায় সম্পত্তিকর আদায়ের পরিমাণ সন্তোষজনক হলেও যাদবপুর(Jadavpur) ও জোকা(Joka) এলাকায় তা তলানিতে ঠেকেছে। পুরনিগমের ১১ ও ১২ নম্বর বরো মিলিয়ে যাদবপুর এলাকা। পুরনিগম থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে ১১ নম্বর বরোয় সম্পত্তিকর আদায় কমেছে বেশ কিছুটা। ১২ নম্বর বরো এলাকায় তা আরও কমেছে। জোকাতেও সম্পত্তিকর আদায় কমেছে আগের তুলনায়। গার্ডেনরিচ এলাকায় সম্পত্তিকর আদায় বৃদ্ধির হার সব থেকে বেশি, যেখান থেকে অতি সম্প্রতি ভূরি ভূরি বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ এসেছে। ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে গার্ডেনরিচ থেকে সম্পত্তিকর আদায়ের পরিমাণ ছিল ১০০ কোটি টাকার কিছু বেশি। ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে যা বেড়ে দাঁড়ায় ১১৭ কোটির কিছু বেশি।
যদিও পুরনিগমের সম্পত্তিকর বিভাগের আধিকারিকদের দাবি, গার্ডেনরিচে(Gardenreach) সম্পত্তিকর বাড়লেও তা আহামরি কিছু নয়। ওই এলাকায় যে পরিমাণ বেআইনি বাড়ি রয়েছে, তাতে এই বৃদ্ধির হারটা নগণ্য। কর আদায় যে মূল তিনটি স্তম্ভের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে, Assessment South, Assessment North ও টালিগঞ্জ কর বিভাগ, সেই তিনটির মধ্যে টালিগঞ্জ কর বিভাগে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির হার চোখে পড়ার মতো। ২০১৯ সালে টালিগঞ্জ কর বিভাগে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ১০০ কোটি টাকারও কম। সেই বিভাগ গত অর্থবর্ষে ১৫০ কোটি টাকার বেশি কর আদায় করে সাফল্যের মুখ দেখেছে। কিন্তু বাকি ২টি থেকে সেভাবে আদায় বাড়েনি। আর সব থেকে বড় ধাক্কা এসেছে জোকা ও যাদবপুর থেকে। ওই দুই এলাকায় কীভাবে বকেয়া সম্পত্তিকর আদায় দ্রুত করা যায় সেটাই এখন ভাবছেন কলকাতা পুরনিগমের আধিকারিকেরা।