নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ২০১৩ সালের কামদুনিকাণ্ড গোটা দেশে আলোড়ন ফেলেছিল। শুক্রবার হাইকোর্টে এই কামদুনি গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনার সাজা ঘোষণা করা হল। দুজনের ফাঁসির সাজা রদ করল হাইকোর্ট। ৪ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হল। দোষী আনসার আলি মোল্লা এবং সইফুল আলি মোল্লাকে ফাঁসির পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। বেকসুর খালাস পেল আমিন আলি, ইমানুল হক, ভোলানাথ নস্কর এবং আমিনুর ইসলাম।
রায় শুনেই আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন কামদুনির প্রতিবাদীরা। অসুস্থ হয়ে পড়লেন মৌসুমি কয়াল। ‘সুবিচার পেতে সুপ্রিম কোর্ট যাব’,জানাল নিহত নির্যাতিতার পরিবার।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৭ জুন পরীক্ষা দিয়ে কামদুনিতে বাড়িতে ফিরছিলেন রাজারহাট ডিরোজিও কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীটি। বাস থেকে নেমে হাঁটছিলেন। তাঁকে জোর করে রাস্তা থেকে পাঁচিল ঘেরা একটি ঘরে নিয়ে যায় ৯ জন দুষ্কৃতী। ফেরার পথে দফায় দফায় চলে গণধর্ষণ। এরপর তাঁকে ভেড়িতে ফেলে দেয় দুষ্কৃতীরা।
পরিবার ও এলাকার লোকজন খোঁজখবর শুরু করে। গ্রাম থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ৮ বিঘে ভেড়ি অঞ্চলে একটি পাঁচিলের পাশে নির্যাতিতার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। রাজ্য জুড়ে চলে আন্দোলন। ঘটনার তদন্তভার পায় সিআইডি। গ্রেফতার করা হয় ৯জনকে। প্রমাণের অভাবে দু’জন আগেই ছাড়া পেয়ে গিয়েছিল। মামলা চলাকালীন আরও এক অভিযুক্তের মৃত্যু হয়েছিল।
২০১৬ সালে ৬ জন অভিযুক্তর সাজা ঘোষণা করেছিল কলকাতা নগর দায়রা আদালত। দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল সইফুল আলি মোল্লা, আনসার আলি মোল্লা, আমিন আলি, ইমানুল হক, ভোলানাথ নস্কর ও আমিনুল ইসলাম। সইফুল, আনসার ও আমিনকে ফাঁসির সাজা দিয়েছিল কলকাতা নগর দায়রা আদালত। বাকি ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল।
হাইকোর্টে সাজা মকুবের জন্য দোষীরা আবেদন জানায়। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলা উঠেছিল। বিগত প্রায় পাঁচ মাস ধরে চলে শুনানি। শুক্রবার সেই মামলায় রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাই কোর্ট।