নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশে(India) এখন মুসলিমদের(Muslims) সংখ্যা নাকি হু হু করে বাড়ছে। পরিস্থিতি এমনই যে ২০৩০ সালের মধ্যে মুসলিমরাই নাকি ভারতে সংখ্যাগরিষ্ঠ সমাজ হিসাবে উঠে আসতে চলেছেন। এইরকম দাবি নানান সময়ে নানান মহল থেকে দাবি করা হয়। তার মধ্যে গেরুয়া শিবিরও রয়েছে। কিন্তু হাওয়ায়া ভাসিয়ে দেওয়া কথা আর বাস্তব সংখ্যার মধ্যে যে বড় ফারাক রয়েছে সেটা এবার মেনে নিল খোদ কেন্দ্র সরকার। আর সেটাও এক তৃণমূল সাংসদের(TMC MP) তোলা প্রশ্নে। দিল্লিতে সংসদ ভবনে এখন চলছে বাদল অধিবেশেন। সেখানেই লোকসভার দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের(Mala Roy) এক প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি(Smriti Irani) লিখিত ভাবে দেশে মুসলিমদের জনসংখ্যার বিষয়টি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশ সত্ত্বেও ৮টি কোর্স চালুর অনুমোদন পেল না কলেজ
স্মৃতি তাঁর লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ১৪.০২ শতাংশ। ২০২৩ সালের মধ্যে তা ১৯.৭৫ কোটিতে দাঁড়াবে। অর্থাৎ দেশে এখন মুসলিমদের জনসংখ্যা ২০ কোটির নীচেই। চিঠিতে স্মৃতি লিখেছেন, ‘জনসংখ্যা সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত গোষ্ঠী ২০২০-এর জুলাইয়ের জনসংখ্যা কমিশনের রিপোর্ট অনুসারে ২০২৩ সালে দেশের জনসংখ্যা ১৩৮.৮২ কোটি। সেই মতো এখানে ১৪.২ শতাংশের হিসেবে ২০২৩-এ মুসলিম জনসংখ্যা দাঁড়ায় ১৯.৭৫ কোটি। পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন মন্ত্রকের শ্রম বাহিনী সমীক্ষা ২০২১-২২ অনুযায়ী সাত বছর বা তার বেশি বয়সী মুসলিমদের স্বাক্ষরতার হার ৭৭.৭ শতাংশ। স্বাভাবিক অবস্থা অনুযায়ী, সব বয়সের জন্য শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ৩৫.১ শতাংশ। ২০১৪ সালের ৩১ মার্চের পর প্রথমবার নতুন বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনা বা তৈরি করা মুসলিম পরিবারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছেন ৫০.২ শতাংশ।’
আরও পড়ুন অমর্ত্যের পাশে দাঁড়িয়ে সাসপেন্ড বিশ্বভারতীর প্রতিবাদী পড়ুয়া
জাতি সংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, এ বছরের মাঝামাঝি চিনকে ছাপিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর দেশ হিসেবে উঠে আসবে ভারত। অবশ্য কয়েকজন বিশ্লেষকের মতে, ইতিমধ্যেই জংসখ্যার নিরিখে চিনকে টপকে গিয়েছে ভারত। তবে এখন স্মৃতির তুলে ধরা তথ্যের জেরে মুখ পুড়ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী থেকে গেরুয়া শিবিরের নেতামন্ত্রীদের। কেননা হিন্দুত্বের জিগির তুলে ধরা পদ্মশিবির যেভাবে দেশের সংখ্যালঘু সমাজ বিশেষ করে মুসলিমদের নিশানা বানিয়ে নিয়েছে তাতে করে স্মৃতির তুলে ধরা তথ্য কার্যত বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে। শুধুমাত্র বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্যই যে পদ্ম শিবির মুসলিমদের নিয়ে দেশজুড়ে ভ্রান্ত তথ্য ছড়িয়ে দিয়েছে সেটা এবার সামনে চলে এল তৃণমূলেরই এক সাংসদের তোলা প্রশ্নে।