নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ(Kolkata Port Trust) হুগলি(Hooghly) জেলার বলাগড়ে(Balagarh) গঙ্গার ওপর জেগে ওঠা ভবানীপুর চরে মিনি বন্দর(Mini Port) তৈরির পরিকল্পনা করেছে। সেই মিনি বন্দর গড়ে উঠবে ৩০০ একর জমিতে। এর জন্য জমি অধিগ্রহণেরও পথে হাঁটবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যে সব জমি অধিগৃহীত হতে পারে সেই সব জমির চাষীরাই এখন জমির নায্য দাম ও চাকরির দাবিতে আন্দোলন(Farmers Movement) শুরু করেছেন। তাঁদের দাবি, বন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁদের এই দুই দাবি মেনে নিলে তাঁরা জমি দিয়ে দেবেন। বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের আবেদন, তাঁরা এসে একবার তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসুক। যদিও বলাগড়ের বিডিও নীলাদ্রি সরকার জানিয়েছেন, ‘ওঁরা বক্তব্য আগে লিখিত ভাবে জমা দিন, তারপর দেখা হবে।’
আরও পড়ুন ৫ বছরে দেশজুড়ে বন্ধ হয়েছে ৯৬ হাজার সংস্থা
জানা গিয়েছে, যে এলাকায় ওই মিনি বন্দর গড়ে উঠতে চলেছে সেখানে প্রায় ৩০০জন কৃষক চাষবাষ করেন। তাঁরাই মূলত এখন আন্দোলন গড়ে তুলছেন এই জমি অধিগ্রহণের জন্য। যদিও তাঁদের দাবি, এই আন্দোলন বন্দর গড়া বা জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে নয়। বন্দর হোক অবশ্যই। কিন্তু জমির দাম ও নায্য ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে। ন্যায্য ক্ষতিপূরণ মিললে তাঁরা জমি দিতে প্রস্তুত। আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যেতে তাঁরা রীতিমত ১৭ জনের কমিটিও গড়ে ফেলেছেন। সেই কমিটির তাঁরা নাম দিয়েছেন ‘কৃষক সমণ্বয় কমিটি’। কমিটির সভাপতি হয়েছেন উজ্জ্বল ঘোষ নামে এক কৃষক। সেই কমিটির প্রথম বৈঠক হয় রবিবার বিকালে। সেই বৈঠকেই ঠিক হয়েছে, তাঁদের দাবিদাওয়া তাঁরা লিখিত ভাবে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, ব্লক অফিস-সহ বিভিন্ন দফতরে জমা দেবেন।
আরও পড়ুন মাথাপিছু ১৫ লক্ষ টাকা, বক্সা থেকে সরছে বসতি
কিন্তু আন্দোলন কেন? কৃষকদের দাবি, ১৯৭৬ সালে বন্দর করার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ৯৬ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির জন্য সিইএসসি ওই এলাকায় কিছু জমি কিনেছিল। কিন্তু, বাজারমূল্য অনুযায়ী দাম দেওয়া হয়নি। দু’টির একটি প্রকল্পও হয়নি। ফলে, কাজও মেলেনি। বন্দর কর্তৃপক্ষ জমি নিয়েছিল ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে। তখন এলাকায় জমির দাম বিঘাপ্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ছিল। সিইএসসি জমি নিয়েছিল বিঘাপ্রতি ৩৩ হাজার টাকায়। অথচ, জমির বাজারদর ২ টাকা ছিল। ওই দুটি ঘটনাতেই জমি বিক্রি করে তাঁরা ঠকেছেন। এখন আর তাঁরা নতুন করে ঠকতে চান না। বন্দর হলে আপত্তি নেই। তবে, নির্দিষ্ট দাম দিয়েই আর ক্ষতিপূরণ দিয়েই জমি নিতে হবে।