নিজস্ব প্রতিনিধি: বদলে যেতে চলেছে সিবিএসই(CBSE)’র দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা পদ্ধতি(Exam Type)। ২০২৩ সাল থেকেই তা কার্যকর করা হতে চলেছে। সিবিএসই বোর্ডের সচিব অনুরাগ ত্রিপাঠী(Anurag Tripathi) জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে বোর্ডের পরীক্ষা থেকেই পড়ুয়াদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তনগুলি কার্যকর হবে। প্রথমত, প্রতিটি বিষয়ের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ নম্বর বরাদ্দ থাকবে ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্ট বা অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের জন্য। দ্বিতীয়ত, প্রশ্নপত্রের ক্ষেত্রেও কিছু গঠনমূলক পরিবর্তন(Question Type) আনা হচ্ছে। তৃতীয়ত, পরিবর্তন আনা হচ্ছে প্রশ্নের ধরনেও। স্বাভাবিক ভাবেই এখন প্রশ্ন উঠেছে এই পরিবর্তনের ফলে কী পড়ুয়ারা(Students) লাভবান হবেন। বিশেষ করে বাংলার পড়ুয়াদের এক্ষেত্রে কী লাভ হবে সে প্রশ্নও উঠে গিয়েছে।
কিন্তু সব থেকে বড় প্রশ্ন কেন এই পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে? অনুরাগ ত্রিপাঠীর মতে, বছরের শেষে মাত্র তিন ঘণ্টার পরীক্ষায় কোনও পড়ুয়ার উপযুক্ত মূল্যায়ন সঠিকভাবে করা যায় না। তাই, সারা বছরের পারফরম্যান্সের বিচারে এই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ব্যবস্থা থাকছে। জাতীয় শিক্ষানীতির ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। নয়া সিস্টেমে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট করতে হবে। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক কাজ এবং খেলাধুলোও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। প্রশ্নপত্রের ক্ষেত্রে যে গঠনমূলক পরিবর্তন আনা হচ্ছে তাতে বিকল্প প্রশ্নের সংখ্যা ৩৩ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে প্রশ্নপত্র আকারে বাড়লেও ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের পছন্দমতো প্রশ্ন বেছে নিয়ে উত্তর দিতে পারবে। তাদের কাছে আরও বেশি করে বিকল্প থাকবে। প্রশ্নের ধরনেও যে পরিবর্তন আনা হচ্ছে তা পড়ুয়াদের কথা ভেবেই। পড়ুয়ারা যাতে বিশ্লেষণ ও সমালোচকমূলক উত্তর লিখতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা হবে। শুধু বই পড়া বিদ্যে বা মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় লেখা নয়, বরং এই ধরনের প্রশ্নের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের নিজস্বতা প্রকাশের সুযোগ থাকবে। তাঁদের স্বাধীন চিন্তাধারার বিকাশ ঘটবে। পাঠ্যবইয়ের বাইরে কোনও বিষয়ে ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশের জন্য পরীক্ষার্থীদের প্রচুর অনুশীলনের প্রয়োজন হবে। তাতে তাঁদের ব্যক্তিগত উৎকর্ষতা অনেকটাই বাড়বে।
আর একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হচ্ছে সিবিএসই-তে। আর তা হল তৃতীয়, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ছাত্রছাত্রীদের মূল্যায়ন করা। ত্রিপাঠীর মতে, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কোনও পরীক্ষার্থীর সঠিক মূল্যায়নের অবকাশ নেই। কিন্তু, নয়া পদ্ধতিতে পড়ুয়াদের এই তিনটি ক্লাসে বিশেষ পরীক্ষা নেওয়া হবে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে পড়ুয়াদের যোগ্যতার মান যাচাই করা হবে। যাতে শিক্ষক ও অভিভাবকরা বুঝতে পারেন, কোন কোন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে উন্নতি করতে হবে। ফলে, শেখার ক্ষেত্রে ফাঁকফোকরগুলি পূরণ করা সহজ হবে। এছাড়াও, পড়ুয়াদের সামগ্রিক মূল্যায়ন কার্ড চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিবিএসই। বেশ কিছু স্কুলে ইতিমধ্যেই পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এই কার্ড চালু করা হয়েছে। এই ‘অ্যাসেসমেন্ট কার্ড’-এর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের পাশাপাশি পড়ুয়াও নিজের মূল্যায়ন করতে পারবে। কোথায় খামতি রয়েছে, তা বুঝতে পারবে।