নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার অগ্নিকন্যাই যে আগামী দিনে দেশনেত্রী হতে চলেছেন সেটা এবার ক্রমশ জোরদার হতে শুরু করে দিল। এমনটাই যে হতে চলেছে সেটা প্রথম বুঝিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেত্রী সোনিয়া গান্ধি। বিজেপি বিরোধী মহাজোটের বৈঠকে দুই নেত্রীর রসায়ন এবং সোনিয়া নিজে যেভাবে মমতাকে কাছে টেনে নিয়েছেন তাতেই সেটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। এবার সেই তত্ত্ব আরও জোরদার হল মণিপুরের রাজ্যপালের অভিপ্রায়ে। বৃহস্পতিবার মণিপুর থেকে কলকাতায় ফিরে এসেছে সেখানে যাওয়া তৃণমূলের(TMC) প্রতিনিধি দল। সেই দলে ছিলেন বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার(Kakali Ghosh Dastidar)। এদিন তিনি নিজে কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানান, যে মণিপুরের রাজ্যপাল অনুসুইয়া উইকে(Anusuiya Uikey) নিজে তাঁদের জানিয়েছেন, মণিপুরে(Manipur) শান্তি ফেরাতে সাহায্য করতে পারেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তিনি যত দ্রুত সম্ভব যেন সেই বিষয়ে উদ্যোগী হন।
আরও পড়ুন রাজ্যপালকে অধিবেশন নিয়ে কোনও জবাবদিহি নয়, অবস্থান রাজ্যের
বুধবার সকালে মণিপুরের উদ্দেশে রওনা দেয় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বাধীন দলে ছিলেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, দোলা সেন, কাকলি ঘোষদস্তিদার এবং রাজ্যসভার বিদায়ী সাংসদ সুস্মিতা দেব। মণিপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। বুধবার দুপুরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে তৃণমূলের প্রতিনিধিরা কুকি জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত পাহাড়ি চূড়াচাঁদপুর জেলার পাশাপাশি, মেইতেই জনগোষ্ঠী প্রভাবিত ইম্ফল উপত্যকার কয়েকটি ত্রাণশিবিরও পরিদর্শন করেন। পরে তাঁরা মণিপুরের রাজ্যপালের সঙ্গেও দেখা করেন। মণিপুর সফরের অভিজ্ঞতা জানিয়ে প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা এদিন রিপোর্ট আকারে তুলে দেবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। কিন্ত তার আগেই কলকাতার মাটিতে পা রেখে কাকলি জানিয়ে দিলেন মণিপুরের রাজ্যপাল কী চাইছেন। ভুললে চলবে না, মণিপুরের রাজ্যপালকে কিন্তু নিয়োগ করেছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকার।
আরও পড়ুন অভাব ও মানসিক অবসাদেই আত্মহত্যার চেষ্টা মা-মেয়ের
একই সঙ্গে ভুললে চলবে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে এর আগা নানা রাজ্যে কোনও এলাকা পরিদর্শন বা কোনও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্থদের সঙ্গে কথা বলতে যাওয়ার ক্ষেত্রে বার বার যেভাবে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে, তার ছিঁটেফোঁটাও কিন্তু ঘটেনি মণিপুরের ক্ষেত্রে। অর্থাৎ মণিপুরের শান্তি ফেরাতে ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মমতাও উদ্যোগী হন এমনটাও সম্ভবত চাইছে মোদি সরকারও। কেননা কিবা কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার কিবা মণিপুরের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার, ডবল ইঞ্জিনের ওপর আর ছিঁটেফোঁটা বিশ্বাস নেই মণিপুরবাসীর। সম্ভবত উত্তর-পূর্ব ভারতের কোনও জনজাতির বাসিন্দারাই আর বিজেপিকে বিশ্বাস করতে চাইছেন না। সেটা বুঝেই এবার মমতাকে এগিয়ে দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। কার্যত নিরুপায় হয়ে। কেননা মণিপুরের পরিস্থিতি কী সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে সেখানকার মহিলাদের ওপর অত্যাচার হওয়ার ঘটনা।