নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ফের তুঙ্গে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। রাজভবনের রেসিডেন্সিয়াল এলাকায় নজরদারির অভিযোগ। ফলে রাজভবন থেকে পুলিশ হঠালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রেসিডেন্সিয়াল কিংবা অফিসিয়াল চত্বরে থাকবে না উর্দিধারীরা। তার পরিবর্তে রাজ্যপালের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী বা সিআরপিএফ-এর দায়িত্ব সামলানোর কথা চলছে।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের গতিবিধির উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মীর গতিবিধি সন্দেহজনক বলেই ধারণা রাজভবনের। আপাতত তাঁদের রাজভবনে যেতে বারণ করা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। এই মর্মে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে রাজ্যপাল কলকাতার পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলতে চান বলেও সূত্রের খবর।
রাজভবনের তিনতলা থেকে আগেই কলকাতা পুলিশকে সরিয়ে দিয়েছিলেন প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। নিচতলা এবং দোতলায় নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাত পুলিশ। এবার সেখানেও পুলিশদের রাখতে চান না রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। রাজভবনের তরফে এমনই সুপারিশ করা হয়েছে। রাজ্যপালের বর্তমান সুপারিশের ফলে শুধুমাত্র রাজভবনের প্রবেশপথ এবং বাগানের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাবে কলকাতা পুলিশ।
রাজভবনে কারা যাতায়াত করছে তার উপরও নজরদারি করা হচ্ছে। গোটা রাজভবন এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের উপর নজরদারি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তবে পুলিশকর্মীরা কেন রাজভবনে নজরদারি করবেন তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। রাজ্যপাল হিসেবে বাংলার দায়িত্বে আসার পর রাজ্যের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বেশ মসৃণ ছিল। তবে সময় এগোতেই সেই সম্পর্কে ছেদ পড়েছে।
রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। অন্যদিকে ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী তৃণমূল কংগ্রেসের তফসিলি বিধায়কের শপথ নিয়ে এখন জটিলতা অব্যহত। এর মধ্যেই রাজভবনে নজরদারির অভিযোগ ফের সংঘাতের মাত্রা বাড়াবে বলেই ধারণা।
তবে পুলিশের কাছে এখনও পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ আসেনি বলেই দাবি পুলিশের। এই নজরদারির অভিযোগ উঠতেই দলের সহ–সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার পাল্টা কটাক্ষ,‘কে এই অভিযোগ করেছেন, সেটা জানা প্রয়োজন। রাজভবন তো গোপন কোনও সংগঠন নয়। বাইরের দেশও নয়। অন্য দেশের দূতাবাস এমনও তো নয়। রাজভবন রাজ্যপালের থাকার জায়গা। গোপন কাজকর্ম নেই যে, নজরদারির প্রশ্ন উঠবে। সেরকম কি কিছু করছিলেন? যাঁদের সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা নয়, এমন লোকজনের সঙ্গে দেখা করছিলেন কি? আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আগে আমি দেখেছিলাম, শুভেন্দু অধিকারী রাজভবনে গিয়ে ইডি–সিবিআই অফিসারদের সঙ্গে পরামর্শ করতেন। তাঁদের কাছ থেকে তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানতেন। এখনও কি সেরকম কাজ চলছে?’