নিজস্ব প্রতিনিধি: রেফারকাণ্ডের জেরে আবারও অস্বস্তি রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। খাস কলকাতার(Kolkata) বেহালার বাসিন্দা বছর ৭০’র মঞ্জু চক্রবর্তীর(Manju Chakrabarty) সেরিব্রাল অ্যাটাক হয় গত শনিবার রাতে। রবিবার সকালেই তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে(SSKM Hospital) নিয়ে আসেন তাঁর পরিজনেরা। ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে। সেখান থেকে মঞ্জুদেবীকে পাঠানো হয় সিটি স্ক্যানের জন্য। মঞ্জুদেবীর পরিজনেরা ভেবেছিলেন ওই স্ক্যান করিয়ে আসার পরেই হয়তো তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু তা তো হয়নি, উল্টে তাঁকে রেফার করে দেওয়া হয় কলকাতা শহরেরই এন আর এস হাসপাতলে(NRS Hospital)। রেফারের কারণ হিসাবে তুলে ধরা হয় হাসপাতালে বেড না থাকার বিষয়টি। কিন্তু রেফারের পরেও সমস্যার সমাধান হয়নিও।
আরও পড়ুন পঞ্চায়েতের ভোট হবে ব্যালটেই, বাক্সে থাকবে কিউ আর কোড
এসএসকেএম থেকে প্রথমে এনআরএস, সেখান থেকে আবার কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল(Kolkata Medical College and Hospital)। কিন্তু কোথাও ভর্তি নেওয়া হয়নি মঞ্জু দেবীকে। শেষে রবিবার রাতেই তাঁকে ফের এসএসকেএমে ফিরিয়ে আনেন তাঁর পরিজনেরা। কিন্তু সারা রাত সেই হাসপাতালের বাইরে স্ট্রেচারে পড়ে থাকার পরেও ভর্তি হতে না পারায় মঞ্জুদেবীকে নিয়ে সোমবার সকালেই বেহালার বাড়িতে ফিরে আসে তাঁর পরিবার।
আরও পড়ুন বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ২১টি পুরসভাকে সতর্ক করলেন ফিরহাদ
৭০ বছর বয়সী একজন রোগীকে কেন এভাবে হয়রানি করা হবে তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। রেফার কাণ্ড ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রী জেলায় জেলায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়েছেন। তার জেরে কলকাতার হাসপাতালে জেলার রোগীদের ভিড় অনেকটাই কমেছে। কিন্তু কলকাত্যার রোগীরা এখনও বার বার রেফার রোগের শিকার হচ্ছেন। কেন বার বার এই ঘটনা ঘটছে সেই প্রশ্নও উঠে গিয়েছে। কেন শহরের ৩টি সরকারি হাসপাতাল ঘুরেও বেড পেলেন না মঞ্জু দেবী সেই প্রশ্নে রীতিমত অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। রববার সারা রাত মঞ্জু দেবী এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারের সামনে পড়েছিলেন। কেন তারপরও ওই হাসপাতালে তাঁর জন্য কোনও বেডের ব্যবস্থা করা যায়নি সেই প্রশ্নে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে স্বাস্থ্য দফতর, তেমন ইঙ্গিতই মিলেছে নবান্ন থেকে।
আরও পড়ুন ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন করা যাবে ‘ঐক্যশ্রী’ প্রকল্পে
মঞ্জুদেবীর পরিবার জানিয়েছে, বেহালার বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিউরো বিভাগের কোনও স্পেশ্যাল বিভাগ নেই। স্থানীয় এক চিকিৎসক মঞ্জুদেবীকে একটি আপাতকালীন ওষুধ দিয়েছেন। কার্যত সেই ওষুধের জোরেই এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মঞ্জুদেবী। নিজের বাড়িতেই রয়েছেন তিনি। গোটা ঘটনায় রীতিমত ক্ষুব্ধ মঞ্জুদেবীর পরিবার। তাঁদের দাবি, কলকাতার বাসিন্দা হয়ে কলকাতার একের পর এক সরকারি হাসপাতালে গিয়ে যদি রেফারের পর রেফার অর্ডারের মুখে দাঁড়াতে হয় তাহলে কলকাতার বাসিন্দাদের চিকিতসা করানোর জন্য কী এবার ভিন জেলায় যেতে হবে নাকি ভিন রাজ্যে যেতে হবে!